তিনি দলের বর্ষীয়ান নেত্রী। পাশাপাশি বিগত ৫ বছর সামলেছেন লোকসভার অধ্যক্ষের পদ। তবে বয়সটাই কাল হল তাঁর। আগামী সপ্তাহেই তিনি পা দিতে চলেছেন ৭৬-এ। যার ফলস্বরূপ, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর যোশি, শান্তা কুমারদের মতো, তিনিও পড়ে গিয়েছিলেন মোদী-শাহদের বাদের খাতায়। হ্যাঁ, আরও কয়েকজন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতার পরে এবার এল লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের পালা। বিজেপির অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছেন বুঝতে পেরেই ইন্দোর থেকে আটবারের জেতা সাংসদ সুমিত্রা শুক্রবার নিজেই ঘোষণা করে দিলেন, এবার আর ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না। তিনি নিজেই সরে দাঁড়াচ্ছেন ভোটযুদ্ধ থেকে। তাঁকে নিয়ে পার্টির বিব্রত হওয়ার কারণ নেই।
প্রসঙ্গত, মোদী-শাহের আমলে বিজেপিতে নিয়ম হয়েছে, ৭৫ বছরের বেশি বয়সী কাউকের আর ভোটের টিকিট দেওয়া হবে না। তা তিনি যে-ই হোন না কেন, যতই অভিজ্ঞ হোন না কেন! সেই নিয়মেই এবার প্রার্থী হতে পারেননি এমন কয়েকজন নেতা, যাঁরা বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। দীর্ঘদিনের সৈনিক। কিন্তু সুমিত্রাকে সরাসরি প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। প্রথম দফায় ভোটের যখন মাত্র কয়েকদিন বাকি, তখনও ইন্দোর থেকে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি বিজেপি। শোনা যাচ্ছিল, সুমিত্রাকে দাঁড় করানো হবে কি হবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছিল তারা। আর তা টের পেয়েই দলকে অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রবীণ নেত্রী সুমিত্রা নিজেই সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন।
কিন্তু সেইসঙ্গে সুমিত্রা দলকে যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে অভিমানের সুর। তিনি লিখেছেন, বিজেপি এখনও ইন্দোরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। দল কেন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না? সম্ভবত তারা অস্বস্তিতে পড়েছে। দলের অস্বস্তির কোনও কারণ নেই দাবি করে সুমিত্রা বলেন, আমার সঙ্গে নেতৃত্বের আগেই আলোচনা হয়েছে। আমি তাঁদের ওপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছি। মনে হয়, তাতেও তাঁরা অস্বস্তি থেকে মুক্ত হতে পারেননি। তাই আমি নিজেই ঘোষণা করছি, ভোটে দাঁড়াব না। দল এখন কোনও অস্বস্তি ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিতে পারে, ওই কেন্দ্র থেকে কে দাঁড়াবেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও সুমিত্রা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য কাউকে অনুরোধ করবেন না। এমনকী গত তিন দশকেও কাউকে তিনি এ ব্যাপারে অনুরোধ করেননি। গত সপ্তাহের শুরুতে তিনি বলেন, ১৯৮৯ সালে প্রথমবার ইন্দোর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। সেবারও কাউকে অনুরোধ করিনি। দল নিজেই আমাকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এবার কেন বিজেপি ইনদওরের প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি? এ প্রশ্নের উত্তরে সুমিত্রা বলেন, যাঁরা বিজেপির সাংগঠনিক দিকটা দেখাশোনা করেন, তাঁরা সম্ভবত অন্য কিছু ভাবছেন। কে প্রার্থী হবেন, সে কথা আমাদের দলে কেউ জিজ্ঞাসা করে না। সংগঠনের মাথারাই সব সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে তারাই যথাযথ সময়ে এ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন।