মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শুভলগ্ন আগেই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন জ্যোতিষীরা। এবার মনোনয়ন পত্র জমা করতে আসার সময় জ্যোতিষীর নির্ধারিত সবুজ রঙের শাড়ি পরে সিউড়ি প্রশাসনিক ভবনে এলেন তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। একই সঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন প্রার্থী অসিত মাল।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগে দু’বার নিজের জ্যোতিষীর নির্দিষ্ট করে দেওয়া রঙের শাড়ি পরেই মনোনয়ন জমা করেছেন বলে অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে শুধু শাড়ি নয়, রামপুরহাট থেকে যে নির্দিষ্ট রুটে এসে গত দু’বার সফল হয়েছেন, সেখান দিয়েই শুক্রবার তিনি সিউড়িতে আসেন। যদিও নিরাপত্তার বেড়াজালে তারকা প্রার্থীর বাবা, মা প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে পারেননি। এবারও শতাব্দী রায়ের প্রার্থী পদের অন্যতম প্রস্তাবক প্রথমবারের লড়াই থেকে পাশে থাকা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, প্রতিটি নির্বাচনেই তারাপীঠে পুজো দিয়ে তারামায়ের আশীর্বাদ নিয়ে মনোনয়ন জমা করেন বোলপুরের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মাল। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
তবে এদিন আরও একটি বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। শুধু দিনক্ষণ নয়, অভিনেত্রী প্রার্থীর এদিনের পোশাকের রংও নির্ধারণ করে দেন পণ্ডিতরা। এবার সবুজ শাড়ি তাঁর জন্য শুভ বলা হয়েছিল। পণ্ডিতজি বলেছেন, তাঁর কথা কী অমান্য করা যায়! ফুলহাতা সবুজ ব্লাউজ ও সবুজ রঙের শাড়ি পরেই সিউড়িতে আসেন প্রার্থী। এর আগে ২০১৪ সালে পণ্ডিতদের বিধান ছিল হলুদ শাড়ি তাঁর জন্য শুভ। সেই রঙের শাড়ি পরে মনোনয়ন জমা করেছিলেন অভিনেত্রী। সাফল্যও এসেছিল।
তবে এদিন আরও একটি তথ্য ফাঁস করেছেন শতাব্দী রায়ের ঘনিষ্ঠরা। প্রথমবার তিনি যখন প্রার্থী হয়েছিলেন, রামপুরহাট থেকে গাড়িতে করে সাঁইথিয়া হয়ে সিউড়ি আসেন। ২০১৪ সালেও একই রুটে মনোনয়ন জমা করতে আসেন এই অভিনেত্রী প্রার্থী। এবারও সেই শুভ রুট ধরেই তিনি প্রশাসনিক ভবনে আসেন। আসার পথে সতীপীঠ নন্দিকেশরীতলায় পুজো দেন তিনি। পরে অবশ্য সিউড়ির রক্ষাকালীতলা ও পাথরচাপুড়িতেও যান। শতাব্দী রায়ের মা লালিমা রায়ও ভীষণ ঠাকুর ভক্ত। তিনি কলকাতায় তাঁর গুরুদেবের আশ্রম থেকে প্রসাদি ফুল আনেন মেয়ের জন্য। সেই ফুল নিয়েই শতাব্দী রায় প্রশাসনিক ভবনে ঢোকেন।
লালিমাদেবী বলেন, মেয়ে গত দু’বার সফল হয়েছে, এবারও হবে। অভিনেত্রীর বাবা শৈলেন রায় বলেন, প্রথমবার মেয়ের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ে এলাম। খুব ভালো লাগছে। শুধু শতাব্দী রায় নন, অসিত মালও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শুভদিনটিকে খুবই মানেন। সাত সকালে স্নান করে তারামায়ের আশীর্বাদ নিয়ে তিনি প্রশাসনিক ভবনে হাজির হন। শতাব্দী রায় বলেন, এসব মানেন না, এমন লোক খুব কমই আছে। আমি ঈশ্বর, শুভ-অশুভ মেনে চলি। খারাপ তো কিছু হয়নি, ভালোই হয়েছে। অসিত মাল বলেন, তারামায়ের আশীর্বাদ পেয়েছি, জয় হবেই।
শতাব্দীর কথায়, ‘মা আমার জীবনে পয়মন্ত। তবে এবার শুধু মা নয়, বাবাও এসেছেন মেয়েকে মনোনয়ন পেশের আগে আশীর্বাদ করতে।’ তিনি আরও জানালেন, এবার তিনি আরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতবেন। হ্যাটট্রিক করবেন। কারণ, গত ১০ বছর এই কেন্দ্রের সাংসদ হিসেবে কাজের সুবাদে বীরভূমের মানুষের কাছে সিনেমার নায়িকার তকমা থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন।