লোকসভা নির্বাচন মাথায় রেখে বাংলার বাইরেও নির্বাচনী প্রচারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরুটা করলেন আসামের ধুবুড়ি থেকে। এবার আসামের বেশ কয়েক জায়গায় প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। তাঁদের সমর্থনেই শুক্রবার প্রচারে গিয়ে মমতার ঘোষণা, ‘আগামী দিনে আসাম জয় করব’।
এদিনের সভার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ড বিল নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘তৃণমূলকে দুর্বল ভাবার কোনও কারণ নেই। আগামীদিনে আমরা আসাম জয় করব। আসামে একসঙ্গে যেদিন ৪০ লক্ষ লোকের নাম বাদ গেল, তখন আমার বুকে একটা ধাক্কা লেগেছিল। তখন কিন্তু আপনারা যাঁদের ভোট দিয়ে জেতান, তাঁরা কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। আমরা দাঁড়িয়েছিলাম। আমি দেখিনি আসামে আমার বিধায়ক, সাংসদ বা পঞ্চায়েতের কে আছে, আমি শুধু দেখেছি এখানে আমার মা–মাটি–মানুষ আছে। কিছুদিনের মধ্যেই প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছি। কিন্তু এখানকার প্রশাসন তাঁদের উপর অত্যাচার করে। আমার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়, যাতে আমি আসামে ঢুকতে না পারি’।
এরপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসামের বিজেপি সরকারকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘আপনাদের এক্সপায়েরি প্রাইমমিনিস্টার মোদীবাবু খালি এদিক–ওদিক ঘুরে বেড়ায় আর উল্টোপাল্টা বলে বেড়ায়। আর বিজেপি নির্বাচনের সময় হোক কিংবা সারা বছর হিন্দু–মুসলমান করে। বাংলায় বিজেপি দাবি করছে বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। আর এখানে এনআরসি–র নামে ভোটারদের নাম বাদ দিয়েছে। ওই তালিকায় হিন্দু–মুসলিম ভোটারদের নাম বাদ গিয়েছে। অসমে বাঙালি হিন্দু–বাঙালি মুসলিম আলাদা করা হয়েছে। আপনারা এই ভোট ভাগাভাগি করতে দেবেন না। সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ড বিলের মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। এটা আরেকটা চক্রান্ত’।
মোদী সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘আসামের মন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? উনিও তো টাকা নিয়েছেন। সারদা কর্তা নিজে বলেছেন, তিনি অসমের মন্ত্রীকে টাকা দিয়েছেন। তৃণমূল সরকার বাংলায় ২ টাকা কিলো দরে চাল দেয়, বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেয়, অসম সরকার কী করেছে? শুধু মুখে বড় বড় কথা’। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে মোদী বলেছিলেন আমি চাওয়ালা। আর এখন সেই চাওয়ালা চা বানাতেই ভুলে গেছেন। এখন বলছেন আমি চৌকাদার। আর চৌকিদারের নামে মিথ্যাচার করছেন’।
