দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট। সব প্রার্থীরাই তুমুল ব্যস্ত প্রচারে। সবকিছু উপেক্ষা করে মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়াই এখন সকলের মূল লক্ষ্য। দিনরাত এক করে প্রচার করছেন সকলে। তবে শরীরকেও তো ঠিক রাখতে হবে। তাই মমতার বাতলে দেওয়া ঢ্যাঁড়শ–ভেজানো এক গ্লাস জল খেয়েই দিন–রাত প্রচারে ছুটে চলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
রবীন্দ্রনাথ জানালেন, “এখন বিশ্রাম, খাওয়াদাওয়া নিয়ে ভাবার সময় নেই। বছরভরই জনসংযোগ আছে, তাও ভোট এলে না গিয়ে পারি না।’ তবে তাজা থাকার রহস্য ফাঁস করলেন নিজেই, ‘সকালে দিদির বাতলে–দেওয়া ঢ্যাঁড়শ–ভেজানো জল খেয়েই স্নান করে নিই। তার পর ইনসুলিন নিয়ে সেদ্ধ সবজি আর সামান্য ভাত খেয়েই সকাল ৮টায় বেরিয়ে পড়ি”। দুপুরে কোনও দলের কর্মীর বাড়িতে ডাল–ভাত খেয়ে নেওয়া বা শুধুই টক দইয়ে আহার। ফিরতে বাজে রাত ১০টা।
কোচবিহার লোকসভায় যেমন ৭টি বিধানসভা পড়ছে, তেমনই জেলার তুফানগঞ্জ পড়ছে আলিপুরদুয়ার লোকসভায়। মেখলিগঞ্জ পড়ছে জলপাইগুড়ি লোকসভায়। ফলে জেলা সভাপতি হিসেবে তুফানগঞ্জ ও মেখলিগঞ্জের দুর্গ রক্ষাও তাঁর দায়িত্ব। পাশাপাশি জলপাইগুড়ির প্রার্থী বিজয়কৃষ্ণ বর্মনের প্রচারে ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়িও ছুটতে হচ্ছে। সময় দিতে হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। প্রায়ই ফেসবুক লাইভে থাকছেন। কখনও পোর্টালে বা নিউজ চ্যানেলে। সব মিলে প্রার্থীকে জিতিয়ে কোচবিহার কেন্দ্র ‘দিদি’–কে উপহার না দিয়ে থামতে চান না বিশ্বস্ত সেনাপতি রবীন্দ্রনাথ।
গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে ব্যস্ততা তো ছিলই। তিনিই দলের জেলা সভাপতি। ফলে জেলায় ভোটের কান্ডারিও তিনিই। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা চলছে অবিরাম প্রচার। গত দু’মাসে পথসভা, কর্মীসভা, জনসভার সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতেই চাপ আরও বেড়েছে। প্রার্থী পরেশ অধিকারীর মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য হলফনামা তৈরি থেকে শুরু করে, সঙ্গে নিয়ে গিয়ে মনোনয়ন দাখিল— সবেতেই সভাপতি রবীন্দ্রনাথ। প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচনী ক্ষেত্রের ৭টি বিধানসভার ২০১০টি বুথেই পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে তাঁর। দিনে ২০ থেকে ২৫টি কর্মীসভা করেন। এরই মাঝে জেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চের ব্যবস্থা থেকে লোক আনা, ভরসা সেই জেলা সভাপতি।