আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই শুরু হয়ে যাবে লোকসভা ভোট। প্রথম থেকেই প্রচারে ঝড় তুলছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। সব কিছুকে উপেক্ষা করে পৌঁছে যাচ্ছেন মানুষের কাছে। ঠিক এভাবেই চড়া রোদ উপেক্ষা করে দিনভর প্রচার করছেন বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ।
মাথার ওপর গনগনে রোদ। কিন্তু কোনও বাধাই যেন বাধা নয়। মাথায় চড়া রোদ নিয়েই চলছে মিছিল আর তার সামনেই প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ। পেছনে হাজার হাজার কর্মী–সমর্থক। আদিবাসীরা বাজাচ্ছেন ধামসা–মাদল। সঙ্গে নাচ করছেন আদিবাসী রমণীরাও। প্রার্থীও ছিলেন খোশমেজাজেই। কেউ সই চাইছেন, কেউ পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে চাইছেন। হাসিমুখে সব আবদারই মেটালেন অর্পিতা। সবমিলিয়ে ভরদুপুরেও বেশ জমাট আবহ। প্রচারের মধ্যেই জানালেন, “ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোদী, সেসব আর চলবে না”।
গ্রামের সমস্যাগুলোই তুলে ধরছেন প্রার্থী অর্পিতা। বলেন, সারা বিশ্বে তেলের দাম কমলেও এদেশে তা বেড়েই চলে। জিনিসের দামও বেড়েছে। গরিব মানুষের বাড়ি বাড়ি রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার ঢালাও প্রচার করছেন মোদী কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টো হয়েছে। বছরে দুটো গ্যাসও মেলেনি গরিবদের। মিথ্যা ভাঁওতা বেশিদিন চলে না।’ কেন তৃণমূলকে জেতানো উচিত, তা–ও ব্যাখ্যা করেন অর্পিতা, ‘রাজ্যে ৪২টি আসন পেলে কেন্দ্রে সরকার গঠনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্ণায়কের ভূমিকায় থাকবেন। সেক্ষেত্রে আমাদের জেলার জন্য আরও বেশি কাজ করা যাবে।’
জয় সম্পর্কেও সংশয় নেই, এমনই দাবি প্রার্থীর। তিনি জানালেন ‘বিজেপি–র ঘরে থাকা কয়েকজন নেতা বালুরঘাটে গুজব ছড়াচ্ছেন যে তাঁরা এবারে বালুরঘাট লোকসভা আসনে জিতবেন। এটা এত সহজ নয়। এখানে তৃণমূল ছিল, আছে ও থাকবে। জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।’ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উমা রায় জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কুমারগঞ্জ ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫টি তৃণমূলের দখলে। বিজেপি যে ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত পেয়েছিল, সেগুলিতে ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় এলাকার লোকজন হতাশ। ফলে, এবার কুমারগঞ্জ বিধানসভা এলাকা থেকেই তৃণমূল কমপক্ষে ১০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবে।
অর্পিতার সোমবারের ঠিকানা ছিল গঙ্গারামপুরের গ্রামীণ এলাকা। শুধু শহুরে ভোটার নয়, গ্রামের ভোটারদের কাছেও সাবলীল এলাকার সাংসদ। দুপুরে গঙ্গারামপুর ব্লকের ঠ্যাঙাপাড়ার কাছে বাতাসকুড়ি গ্রামে হল জরুরি বৈঠক। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তফসিল জাতিভুক্ত তৃণমূল নেতা–নেত্রীদের ডাকা হয়েছিল এই বৈঠকে। জেলার নানা প্রান্ত থেকে অনেকেই হাজির হয়েছিলেন বাতাসকুড়ি গ্রামে। ওই গ্রামেই গঙ্গারামপুরের তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তফসিল সেলের রাজ্যনেতা সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়ি। তিনি ছাড়াও হাজির ছিলেন তপনের বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। বৈঠকের পরে শতাধিক কর্মী ও নেত্রী একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন সারেন সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতেই।