অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের ডঙ্কা বাজালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার ভাষনের শুরু থেকেই মমতা ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। তিনি বলেন, ‘মোদী ক্ষমতা থেকে সরার পর তিরূপতিতে পুজো দিতে আসব।’

রবিবার বিশাখাপত্তনমে ভাষণের শুরুতেই তেলেগু ভাষায় কথা বলে সবাইকে চমকে দেন বাংলার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও বিরোধী জোটের বীজ পুঁতেছিলেন তিনিই। ১৯-এ ব্রিগেডের মঞ্চে সকল বিরোধী দলকে একছাতার তলার যে কাজ তিনি করেছিলেন, সেটাকেই আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন চন্দ্রবাবু। তিনি ভাষণ শেষ করে নামার পরেই মঞ্চে বক্তব্য পেশ করতে ওঠেন মমতা। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন স্পেশাল নির্বাচন ভেবে ভোট দিতে হবে। ভেবেচিন্তে ভোট দিতে হবে। বিধানসভা ও লোকসভার নির্বাচন রয়েছে এখানে। একটা মাথায় রাখবেন, চন্দ্রবাবু নাইডু অনেক কাজ করেছেন। ওনাকে ভোট দেওয়া জরুরি।’ বিজেপিকে বিঁধে মমতা বলেন, ‘এক নরেন্দ্র মোদী, আর একজন তাঁর দোস্ত অমিত শাহ। সবার বিরুদ্ধেই কিছু না কিছু করেন। সবাইকে ধমক দেয়।’ এদিন বিরোধী জোটের মঞ্চে ফের একবার প্রধানমন্ত্রিত্বের সওয়াল থেকে দূরে সরে এসে বিরোধী দলগুলিকে একজোট করে রাখার কাজটাই করেন মমতা। সাফ বলে দেন, ‘কে প্রধানমন্ত্রী হবে, ভোটের পর আমরা ঠিক বলে দেব। চিন্তা করবেন না।’

এদিনের সভায় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘গতবার চাওয়ালা হয়েছিলেন। এবার চাওয়ালা থেকে চৌকিদার হয়ে গেলেন। ওনার আমলে সব থেকে বেশি সন্ত্রাসবাদ বেড়েছে। সব থেকে বেশি কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বেকারত্ব ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। সন্দেহ হয়, দলের ভিতরেও কথা বলেন কিনা। ভাষণ দিলেও টেলিপ্রম্পটার দেখে বলেন। ৫৬ ইঞ্চি ছাতি নিয়ে ৫৬০ ইঞ্চি মিথ্যা কথা বলে বেড়ান। সকালে মিথ্যা বলেন, রাতে মিথ্যা বলেন। আমি মিথ্যা বলতে লজ্জা পাই। উনি এসব পারেন।’

সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘রাজ্য অগ্রগতি করলেই দেশ এগিয়ে যাবে। আর এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন রাজ্যের মানুষরাই।’ এদিন কার্যত ধুয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীকে। মোদীর উদ্দেশ্যে খোলা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘আসুন না বিতর্ক হয়ে যাক। আপনার চ্যানেলেই হোক। আপনি থাকবেন। বিরোধীদের পক্ষে থেকে কেউ একজন থাকবেন। আমি রাজি আছি আপনার সঙ্গে বিতর্কে। কাগজ, টেলিপ্রম্পটার নিয়ে আসব না। দেখি কার কত জোর।’
