প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পে অপরিচ্ছন্নতার মাপকাঠিতে ভারতীয় রেলের স্থান বেশ উপরেই। প্রতিদিন ট্রেনের মধ্যে ছড়িয়ে থাকে প্লাস্টিকের প্যাকেট। পানীয়ের বোতল, চায়ের কাপ, ফাস্ট ফুডের প্যাকেট ইত্যাদি। সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন ভারতীয় রেল তৈরি করে প্রায় কয়েক টন বর্জ্য। রেলের এই অপরিচ্ছন্নতায় বিরক্ত জাতীয় পরিবেশ আদালত। পরিবেশকর্মী থেকে পরিবেশ আদালত, একাধিক বার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রেলের অপরিচ্ছন্নতা। যদিও অভিযোগ, অবস্থার পরিবর্তন ঘটেনি বা পরিবর্তন ঘটানোর কোনও চেষ্টা রেলের তরফে দেখা যায়নি। আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশের ৩৬টি রেলস্টেশনের হাল ফিরিয়ে দিয়ে স্টেশনগুলিকে পরিবেশ-বান্ধবে পরিণত করতে উপযুক্ত রূপরেখা পেশে রেলবোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত বছর অক্টোবরে ভারতীয় রেলের পরিচ্ছন্নতা এবং পরিচ্ছন্নতা-রক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল ক্যাগ। সেই রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভারতীয় রেলের ভয়াবহ অবস্থার কথা। লক্ষাধিক কিলোমিটার ছড়িয়ে থাকা রেলট্র্যাক শুধু যে দেশের বৃহত্তম জঞ্জালগাদা। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘বড় স্টেশনগুলোর’ মধ্যে ১৪টা স্টেশনের অবস্থা ভায়াবহ। এই স্টেশনগুলো থেকে নির্গত নোংরা জল কোথায় গিয়ে পড়ছে তার কোনো হদিশ নেই। ওই জল কতটা দূষিত, কোথায় গিয়ে পড়ছে, যেখানে পড়ছে, সেই এলাকা কতটা দূষিত হচ্ছে-তা নির্ণয় করার কোনও ব্যবস্থাই নেই।
এই বিষয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তীর বক্তব্য, “আদালতের নির্দেশের কথা শুনেছি। কিন্তু কোন স্টেশন, তার উল্লেখ নেই নির্দেশে। হয়তো আদালত সেটা রোলবোর্ডকে জানাবে। বোর্ড আমাদের যা নির্দেশ দেবে, সেই অনুযায়ী কাজ হবে”। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, দেশে ছ’হাজার রেলস্টেশনের মধ্যে ৭২০টা স্টেশনকে ‘বড় স্টেশন’ হিসাবে গণ্য করা যায়। এই স্টেশনগুলোর মধ্যে ৩৬টা স্টেশনকে ‘মডেল স্টেশন’ হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে। এই স্টেশনগুলোর মধ্যে বাংলার হাওড়া, শিয়ালদহ, খড়গপুর, নিউ জলপাইগুড়ি ও আসানসোল রয়েছে।