দিনকয়েক আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে নিজের নামের আগে লিখে দিয়েছেন ‘চৌকিদার’। এরপরই তাঁর দেখাদেখি বিজেপির সব কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাই টুইটার প্রোফাইলে নিজের নামের আগে ‘চৌকিদার’ কথাটি বসিয়ে দিয়েছেন। এভাবেই ভোটের মুখে নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ ক্যাম্পেনে সামিল হয়েছে গোটা গেরুয়া শিবির। তবে সেই ভোট প্রচারের অংশ হিসেবে বাদ গেল না রেলে পরিবেশিত চায়ের কাপও! এবার শতাব্দী এক্সপ্রেসের চায়ের কাপে দেখা গেল ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ লেখা! মুহূর্তে সেই ছবি ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ ওঠার ভয়ে তড়িঘড়ি চায়ের কাপ সরিয়ে নেওয়া হলেও বিপাকে মোদী সরকারের রেলমন্ত্রক।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ ভোট ঘোষণা ও নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেইসঙ্গে সেদিন থেকেই চালু হয়ে গেছে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি। এই আদর্শ আচরণবিধি হল অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য একগুচ্ছ নিয়ম। ভোট ঘোষণার পর থেকে ভোট প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টরা কী করবেন ও কী করবেন না, সেটাই বলা আছে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধিতে। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, মন্ত্রীরা সরকারি সফর ও নিজেদের সরকারি পদের সঙ্গে ভোটের প্রচারকে মেলাতে পারবেন না এবং সাহায্য বা ত্রাণ ও উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না। পাশাপাশি, ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলবে, এমন প্রতিশ্রুতি থেকেও বিরত থাকতে হবে। ফলে রেলের চায়ের কাপকে ভোট ক্যাম্পেনে ব্যবহার করা নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের সামিল।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে একাধিকবার নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। নির্বাচন ঘোষণার পরও মোদী সরকারের আয়ুষ্মান বাংলায় ভারত যোজনার চিঠি বিলি নিয়ে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছিল নির্বাচনী আধিকারিকদের। শুধু তাই নয়। আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাওয়ার পরেও দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিটে এবং এয়ার ইন্ডিয়ার বোর্ডিং পাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ছাপানোয় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কেন দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিটে নরেন্দ্র মোদীর ছবি? কেনই বা টিকিটে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে চলছে সরকারি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) এর বিজ্ঞাপন? এই প্রশ্ন তুলে দিল্লীতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থও হয়েছে তৃণমূল। একইরকমভাবে বিভিন্ন পেট্রল পাম্পে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি লাগানো পোস্টার, রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে মোদীর ছবি নিয়েও নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে।