এবার জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে বছরে ১০০ দিনের কাজে ফের মোদীর গড় গুজরাতকে পিছনে ফেলে দিল রাজ্য। শুধু গুজরাতই নয়, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়ুর চেয়েও ‘এগিয়ে বাংলা’।
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগেই ‘ন্যায়’ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। বলা হয়েছে, কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে নিম্ন আয়ের মানুষদের মাসে ছ’হাজার করে বছরে ৭২ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে পথে না হাঁটলেও দেশ থেকে গরিবি দূর করতে জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পকেই হাতিয়ার করতে চেয়েছেন। রাহুলের ‘ন্যায়’-এ যেখানে বছরে ৭২ হাজার টাকা মিলবে, সেখানে তৃণমূলের ঘোষণা কার্যকরী হলে মনরেগা-য় নাম লিখিয়ে সাত মাসেরও কম সময়ে ৭০ হাজার টাকা আয় হবে। এতে গ্রামে অনেক নতুন সম্পদও তৈরি হবে। ন্যায়-এ সে সুযোগ নেই।
বুধবারই তৃণমূলের ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে গ্রামের গরিব মানুষের আয় সুনিশ্চিত করতে ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, প্রকল্পে দৈনিক মজুরিও দ্বিগুণ করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাব কার্যকরী হলে মনরেগা-য় বছরে কম করে সাত মাস কাজ মিলবে। বর্তমানে ১০০ দিনের প্রকল্পে মাথাপিছু ১৭৪ টাকা মজুরি মেলে। সেটা দ্বিগুণ হলে বছরে প্রায় ৭০ হাজার টাকা রোজগার হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে তার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। তার ফলে এক দিকে যেমন গরিব মানুষ কাজের সুযোগ পাবেন, তেমনই তাঁদের মাথাপিছু আয়ও বাড়বে। গ্রামীণ মানুষের কেনার ক্ষমতা বাড়লে নতুন বাজার তৈরি হবে। তাতে সামগ্রিক ভাবেই অর্থনীতির উন্নতি হবে।
কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুসারে, চলতি আর্থিক বছরে মানরেগা-য় বাংলায় পরিবার পিছু কাজ পাওয়ার হার প্রায় ৭৭ শতাংশ। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাতে তা মাত্র ৪৫.৭ শতাংশ। কর্নাটকে ৪৮.৯৫ শতাংশ, ঝাড়খণ্ডে ৪১.৬৬ শতাংশ, উত্তরপ্রদেশে ৪১.৫৭ শতাংশ, মহারাষ্ট্রে ৪৬.২৩ শতাংশ, তামিলনাড়ুতে ৪৪.৪৮ শতাংশ, অন্ধপ্রদেশে ৫৫.৯২ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ৫১.২৭ শতাংশ। সে তুলনায় আয়তনে অনেক ছোট রাজ্য মিজোরামের সাফল্যের হার অনেক বেশি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই পাহাড়ি রাজ্যে পরিবার-পিছু বছরে গড়ে প্রায় ৯০ দিন কাজ পেয়েছে নথিভুক্ত পরিবারগুলি।