বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোট প্রচার শুরু করলেন আসন্ন লোকসভা ভোটে উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল সকাল চিড়িয়া মোড় লাগোয়া সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিয়ে হুড খোলা জিপে উঠে পড়েন তিনি। মন্দিরে পুজো দেওয়ার সময় সঙ্গে স্ত্রী নয়নাও ছিলেন।
কলকাতা পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে সুদীপ শুরু করলেন তাঁর প্রচারযাত্রা। জিপে চেপে ওই ওয়ার্ডের অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়ান তিনি। জিপের সামনে-পিছনে যাঁদের হাঁটতে দেখা গেল তাঁদের গড় বয়স অবশ্য তিরিশের মধ্যে। চেনা মানুষ দেখে জিপ থেকেই তাঁর নাম ধরে ডেকে খোঁজখবর নিয়েছেন উত্তর কলকাতার ‘সুদীপদা’। পাড়ার গলিতে সুদীপকে দেখে কাশীপুরের লকগেট এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা চিৎকার বলে উঠলেন, ‘কেমন আছেন দাদা? শরীর কেমন? চিনতে পারছেন তো?’ ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলে উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থীর জবাব, ‘কেন চিনতে পারব না? তুমি কি আজকের লোক? আমার শরীর ফার্স্ট ক্লাস!’
বিরোধীদের প্রতি কটাক্ষের হাসি হেসে সুদীপের মুখে ট্রিপল হ্যাটট্রিকের কথা। বললেন, ‘আমি লোকসভা, বিধানসভা মিলিয়ে এই এলাকা থেকে আটবার জিতেছি। এবার ন’বার জেতার জন্য লড়ছি। আর বিজেপি প্রার্থী আটবার ভোটে হেরেছেন। এ বার ন’বার হেরে রেকর্ড গড়ার জন্য লড়ছেন’।তবে উত্তর কলকাতায় সুদীপ ঘনিষ্ঠদের একটাই আক্ষেপ, দাদার শরীরটা চাঙ্গা থাকলে জয়ের মার্জিন আরও বাড়ত।
সুদীপ নিজে অবশ্য শরীর নিয়ে চিন্তিত নন। প্রচারের মাঝখানে প্রাতরাশে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে তাই বেশ কয়েকটি সিঙ্গারা আর দুধ চা তিনি খেয়ে ফেললেন অবলীলায়। কলকাতা উত্তরে ভোট একদম শেষ দফায়। অর্থাৎ, সুদীপের ভোট পরীক্ষায় বসতে এখনও প্রায় পঞ্চাশ দিন বাকি। তাই বলে প্রচারে ঢিলে দিতে নারাজ তিনি। তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটি বুথের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক তাড়াতাড়ি সেরে ফেলতে চান তিনি। আত্মবিশ্বাসের খামতি নেই। কিন্তু তাই বলে ভোট-প্রচারে ফাঁকি দিতে নারাজ বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুদীপ। ভোটের ময়দানে তাঁর উদ্দীপনা কোনও তরুণ প্রার্থীকেও হার মানাবে। হুড খোলা জিপে ঠায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে থাকতে ৬৬ বছর বয়সেও তিনি ক্লান্তহীন। তাই বিরোধী দলের প্রার্থীদের ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে কলকাতা উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে পারেন, ‘আমি ভোটে লড়াই করি জিতব বলে। আগেও জিতেছি। এ বার জিতব।’