লোকসভা ভোটের প্রচারে বেরিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনাকেই হাতিয়ার করছেন শতাব্দী রায়। নলহাটিতে রেলগেটে দাঁড়িয়ে থাকার যন্ত্রণা থেকে এলাকার বাসিন্দাদের মুক্তি দিতে সচেষ্ট হয়েছিলেন বীরভূমের বিদায়ী সংসদ সদস্য শতাব্দী রায়। তাঁরই প্রচেষ্টায় এই রেলওভার ব্রীজ তৈরির প্রকল্প অনুমোদন পায়। নিয়মানুযায়ী রাজ্য সরকার ব্রীজ নির্মাণের জন্য প্রায় একশো কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত কিছুই বরাদ্দ করেনি। এছাড়াও গোটা দেশে বিজেপির ব্যর্থতাকেই সামনে আনছেন তিনি।
শতাব্দী রায় বলেছিলেন, ভোটপ্রচারে এসে রেলগেটের জন্য সমস্যায় পড়েছিলাম। তাই মানুষের কষ্ট লাঘব করতে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এখানে ওভারব্রীজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছিলাম। আমার আবেদনের ভিত্তিতেই তিনি ওই ব্রীজের অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু, তৃণমূল রেলমন্ত্রক থেকে সরে আসার পরই ওই প্রকল্প কার্যত ঠান্ডা ঘরে চলে যায়। কংগ্রেসের রেলমন্ত্রী শুধুমাত্র ওই প্রকল্প চালু রাখতে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। যা হাস্যকর বলেছিলেন শতাব্দী।
গত বছরের নভেম্বর মাসে রেলের জেনারেল ম্যানেজার হরিন্দ্র রাও শতাব্দীকে চিঠি দিয়ে রেল ওভারব্রিজের অনুমোদনের বিষয়টি জানান।
এই প্রকল্পের জন্য প্রায় একশো কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, রেল এখনও পর্যন্ত ব্রীজের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি। এবার লোকসভা নির্বাচনে ভোটপ্রচারে এই রেল ওভারব্রীজই তৃণমূলের প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। গোটা বিধানসভাজুড়ে তৃণমূল কর্মীরা শতাব্দী রায়ের এই অবদানের কথা তুলে ধরে জোর প্রচারে নেমেছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।
শতাব্দী রায় বলেন, নলহাটির ওই ওভারব্রিজ নির্মাণে রেল এখনও কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি। কেন্দ্রের এই বঞ্চনার জন্য প্রকল্পের কাজ মাঝপথে আটকে যাবে। নির্বাচনের পর এই নিয়ে রেলমন্ত্রকের কাছে ফের সরব হবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। নলহাটি শহরের ওপর দিয়ে গিয়েছে বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ রেললাইন। নলহাটি জংশন থেকে মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জেও যাওয়া যায়। উত্তরবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই শহর। এখানে রয়েছে ৫১ সতীপীঠের অন্যতম নলাটেশ্বরী মন্দির। রাজ্যের বৃহত্তম পাথর বলয়ের উপস্থিতিও এখানেই। এই লাইনে প্রতিদিন ৫০ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালগাড়ি যাতায়াতের ফলে দিনের অধিকাংশ সময় লেভেল ক্রসিং গেট বন্ধ থাকে। এই রেলগেটের কারণেই নলহাটির জনজীবন বারেবারে থমকে যায়। ব্যবসাতেও লোকসান হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেলগেটের দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকে যানবাহন। যার জেরে শহরের রাস্তায় নিত্যদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।