বিজেপি সরকারের বিরোধিতাকে ‘দেশবিরোধিতার’ তকমা দিয়ে তা দমন করার চেষ্টা করা গেরুয়া শিবিরের চেনা কৌশল। এবার সেই পথে হেঁটে অন্যায় ভাবে সাসপেন্ড করা হল সাত স্কুল শিক্ষককে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কখনও পুলওয়ামা ঘটনা নিয়ে মতপ্রকাশ করা, আবার কখনও বায়ুসেনার আক্রমনের সাফল্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করায়, আবার কেউ শান্তি স্থাপনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসা করার কারণে উত্তরপ্রদেশের সাত সরকারি স্কুলশিক্ষককে অন্যায় ভাবে সাসপেন্ড করার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সাসপেন্ড হয়েছেন এক জন গ্রুপ-এ এডুকেশন সার্ভিস অফিসারও। এছাড়াও এক বেসরকারি স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।
এক সংবাদপত্রের দাবি, দীনেশ যাদব নামে মুজফ্ফরনগরের যে শিক্ষা আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তিনি পুলওয়ামা হামলা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। সাসপেনশন অর্ডারে বলা হয়েছে, ‘এ হেন মন্তব্য করে আসলে তিনি সরকারি দায়িত্ব লঙ্ঘন করেছেন’। সাসপেন্ড হওয়া সাত স্কুলশিক্ষকের মধ্যে অন্যতম বরাবাঁকি প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টার সুরেন্দ্র কুমার। তাঁর বিরুদ্ধেও এক অভিযোগ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পুলওয়ামা হামলা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা। সুরেন্দ্রর সাফ দাবি, “এ ভাবে সাসপেন্ড করা অন্যায়। কর্তৃপক্ষকে জবাব দেব”। অন্যদিকে সুলতানপুরের প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক অমরেন্দ্র কুমার আবার শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইমরান খানের প্রশংসা করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য দোষী হয়েছেন। আবার আজমগড়ের প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক নন্দজি যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে আপত্তিজনক মন্তব্য করার। রায়বরেলির প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক রবীন্দ্র কানোজিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফেসবুক পোস্টে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, যে ভাবে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান গুলি করে নামিয়েছিল পাকিস্তান ও তার পর ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটকে ধরেছিল, তারপর কি এ দেশ ‘জয়’ দাবি করতে পারে? তাই তাঁর সাসপেনশন অর্ডারে লেখা হয়েছে, ‘এ হেন মন্তব্য সরকারবিরোধী ও সামরিক পদক্ষেপের বিরোধী। এতে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।’ কেন্দ্রের এহেন কার্যকলাপে মানুষের বাক স্বাধীনতায় বাঁধা দেওয়া হচ্ছে বলে অনেকের ধারনা।