মাস দুয়েক আগেই সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে ‘রাবণ’ এবং তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে ‘শূর্পনখা’ বলে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। এবার ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং। হরিয়ানার গায়িকা-নর্তকী স্বপ্না চৌধুরি কংগ্রেসে যোগদান করেছে, এমন খবর পাওয়ার পরেই ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীকে স্বপ্নার সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘সোনিয়া গান্ধী যেমন ইতালির নাচিয়ে ছিলেন, তাঁকে রাজীব গান্ধী বিয়ে করে এনেছিলেন। স্বপ্না চৌধুরিও সোনিয়ার মতোই নাচিয়ে, তাঁকেই বিয়ে করা উচিত রাহুলের। এতে পরম্পরা বজায় থাকবে।’
এখানেই না থেমে উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার বিধায়ক আরও বলেন যে, মোদীর মতো চরিত্রবান এবং সৎ রাজনীতিকের দল কখনই স্বপ্নার মতো কোনও নাচিয়েকে দলে জায়গা দেবে না। রাহুল গান্ধী হয়তো নেতাদের ওপর আস্থা হারিয়ে এখন নাচিয়েদের ওপর ভরসা রাখছেন। তাঁর এই কটূক্তির পর শুধু কংগ্রেসেই নয় দেশের সব কটি রাজনৈতিক দলের তরফেই তীব্র সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে।
আপনেতা সঞ্জয় সিং টুইটারে বলেছেন, ‘আপনার যদি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকে তাহলে ভোটে দাঁড়িয়ে জিতে আসুন। এভাবে নিকৃষ্ট মন্তব্য করে নিজেকে ছোট করছেন কেন?’ পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতি টুইটারে বলেন, ‘জঘন্য মন্তব্য। আমাদের বিশেষ ব্র্যান্ডের ফিনাইল লাগবে এ ধরনের নোংরা মন সাফ করতে। যখন শাসক দলের একজন বিধায়ক এধরনের মন্তব্য করেন, তখন বুঝতে হবে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রশ্রয় আছে তাতে। আজকে দেশীয় রাজনীতি নারীবিদ্বেষী, ব্যক্তিগত এবং বোধবুদ্ধিহীন হয়ে উঠতে শুরু করেছে।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুরেন্দ্রর মন্তব্যের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানিয়েছে নেটিজেনরাও। অন্যদিকে, রবিবারই সুরেন্দ্রর মন্তব্যের জবাবে স্বপ্না বলেছিলেন রাহুল গান্ধী তাঁর বড় দাদার মতোন। তিনি কংগ্রেসে যোগ দেননি। এ ধরনের মন্তব্য করে নারী জাতিকে অপমান করাই বিজেপির সংস্কৃতি কিনা সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শিল্পী।
উল্লেখ্য, মায়াবতী সম্পর্কে দলীয় সহকর্মী সাধনা সিংয়ের করা এক বিতর্কিত উক্তিকেও সমর্থন করেছিলেন সুরেন্দ্র৷ সাধনা বলেছিলেন, বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী একজন রূপান্তরকামীর থেকেও ঘৃণ্য৷ সেই মন্তব্যের সমর্থনে সুরেন্দ্র বলেছিলেন ‘খুব একটা ভুল বলেননি সাধনা সিং৷ যে কোনও আত্মসম্মানহীন মানুষই রূপান্তরকামী৷’ যে কারণে বিতর্কের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে৷ তবে এর থেকে তিনি যে বিন্দুমাত্রও শিক্ষা নেননি, রবিবারই তা প্রমাণ করে দিলেন যোগী রাজ্যের এই বিধায়ক৷