হাতে আর মাত্র দু’সপ্তাহ বাকি। ভোট একেবারে দোরগোড়ায়। ইতিমধ্যেই প্রচারের ঢাকে কাঠি দিয়ে নিজের নিজের কেন্দ্রে নেমে পড়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। কিন্তু এখনও সম্ভাব্য প্রার্থীকে নিয়ে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে পদ্মশিবিরে। বহিরাগত নয়, দলের স্থানীয় নেতাদেরই প্রার্থী করার দাবিতে সরব বিজেপির জেলা, মন্ডল, এমনকী বুথ কমিটির নেতারাও।
কয়েক মাস আগেই নদিয়ার মাজদিয়ায় নিজের পাড়ায় খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। রাণাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তাঁর স্ত্রী রূপালি বিশ্বাসকে প্রার্থী করে মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সত্যজিৎ মতুয়া মতালম্বীদের মুখ ছিলেন। তাই তাঁর স্ত্রী প্রার্থী হওয়ায় মতুয়াদের ভোট শাসক দলই টেনে নেবে বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ। ফলে মতুয়াদের ভোট পেতে একজন মতুয়া মুখই চাইছেন তাঁরা। আবার অন্য একগোষ্ঠীর দাবি, রাণাঘাটে একজন মহিলাকেই প্রার্থী করা হোক। কিন্তু প্রার্থী কে হবেন?
এখনও পর্যন্ত যা খবর, দুটি নাম নিয়েই আলোচনা চলছে। একজন অর্চনা মজুমদার, আর এক বিভা মজুমদার। অর্চনাদেবী পেশায় চিকিৎসক, কলকাতায় থাকেন। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে তিনি মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাঁর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই। শোনা যাচ্ছে, অর্চনাদেবী নাকি এখন দিল্লীতে। যদি রাণাঘাটে লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হন, তাহলে কলকাতায় ফিরবেন।
অন্যদিকে, রাজ্যের পরিচিত বিজেপি নেত্রী বিভা মজুমদারও। গতবার বিধানসভা ভোটে বনগাঁ মহকুমার বাগদা কেন্দ্রে প্রার্থীও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, এদের কাউকেই প্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা। রানাঘাটে স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করার দাবিতে রীতিমতো একজোট জেলা, মণ্ডল, এমনকী বুথ কমিটির নেতারাও। তাঁদের একটাই দাবি, জেলায় দলের সংগঠনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, এমন কাউকেই রানাঘাটে কেন্দ্রে প্রার্থী করা হোক।
এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কেন্দ্রেও দলের সম্ভাব্য প্রার্থীকে নিয়ে ক্ষুদ্ধ বিজেপি স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ক্ষোভ এতটাই যে, এক রাজ্য নেতাকে প্রার্থী করা হলে দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা। শোনা যাচ্ছে, জেলা তো বটেই, বালুরঘাটের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বিজেপির কয়েকজন রাজ্য নেতাও।
গতবার বালুরঘাটে প্রার্থী হয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতা বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি। এবারেও যেমন প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম উঠে এসেছে, তেমনি আবার নীলাঞ্জন রায়ের নামও শোনা যাচ্ছে। সদ্য কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন নীলাঞ্জন রায়। সব মিলিয়ে প্রার্থী বাছাই নিয়ে এমন দলীয় কোন্দলের জেরে এখনও কিছু ঠিক করে উঠতে পারেনি দিলীপ ঘোষরা।