‘বিগত ৫ বছরে মানুষের বিশ্বাস হারিয়েছে মোদী সরকার। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযান। প্রতি বছরই ভারত-পাক সীমান্তে কিছু না কিছু হয়। ওদিক থেকে আঘাত করলে পাল্টা জবাব দেয় আমাদের সেনা। কেউ আমার দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইলে নীরবেই পাল্টা জবাব দেব। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তা ব্যবহার করব না। দেশের স্বার্থে নজর দেব।’ এক সাক্ষাৎকারে ঠিক এইভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার।
তিনি বলেন, ‘বিধানসভা ভোটে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে হেরেছে বিজেপি। ওই সব রাজ্যেই প্রচার করেছিলেন মোদী। শেষ পর্যন্ত কী হল? ফলে বোঝাই যাচ্ছে, দেশে এখন বিজেপি বিরোধী হাওয়া বইছে। বিশেষত গ্রামীণ ভারতে। কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। ঋণের বোঝায় জেরবার তাঁরা। বিরক্তও। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ৩৪০০০ কোটি টাকা ঋণ মকুবের ঘোষণা করেছিলেন। এখনও কৃষকরা লিখিত প্রতিশ্রুতির অপেক্ষায়। ২০১৫-র জানুয়ারি থেকে ২০১৮-র ৬ মার্চ পর্যন্ত ১১৯৯৮ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন!’
এরপরই পাওয়ারের খোঁচা, ‘বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরানো, প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এই সরকার। মানুষ এখনও অপেক্ষা করছেন। আবার নোটবন্দীর ধাক্কায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ লাখ মানুষ বেকার হয়েছেন। আরবিআই বিবৃতি দিয়েছে সব টাকা ব্যাঙ্কে ফিরেছে। কিন্তু তবুও কালো টাকার দাপট কমেনি।’ একইসঙ্গে রাফাল নিয়েও মোদী সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘রাফাল ভাল যুদ্ধবিমান। মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১২৬টি রাফাল কেনার কথা হয়ন তখন প্রতিটি বিমানের জন্য ৩৫০ কোটি দাম ধরে দাসো। কিন্তু তারপর আর ভোটের জন্য এগনো যায়নি। ২০১৬ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে জানান এক একটা বিমানের দাম ৬৭০ কোটি।আবার ২০১৭ সালে দাসো এবং রিল্যায়ান্স ডিফেন্স যৌথভাবে জানায়, বিমান প্রতি দাম পড়বে ১৬৬০ কোটি টাকা। সুপ্রিম কোর্ট রাফাল চুক্তির নথি চাইছে। কিন্তু এজি বলছেন, নথি হারিয়ে গেছে! আবার পরক্ষণেই বয়ান বদলাচ্ছেন তিনি। বলছেন, কেউ একজন ফটোকপি করেছে। গোপনীয়তা রক্ষার জন্য নথি পেশ করতে নারাজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী, অথচ প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে নথির ফটোকপি হয়ে চলে আসছে সংবাদপত্রে!’ পাওয়ারের কটাক্ষ, ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই সুরক্ষিত রাখতে পারে না এই সরকার, নাগরিকদের সুরক্ষা দেবে কী করে?’