আসন্ন লোকসভা ভোটে উত্তর মালদার তৃণমূল প্রার্থী মৌসম বেনজির নুর। মঙ্গলবার সকালে বাবার বাড়ি গাজোলের পান্ডুয়া এলাকা থেকে লোকসভার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন মৌসম। মাথায় কলসি, গলায় রঙিন মালা। পুরো আদিবাসী ঢঙে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নির্বাচনী প্রচারে মাতালেন তিনি। উপস্থিত সকলে আপন করে নিল তাঁকে।
এদিনের নির্বাচনী প্রচারে মৌসম নুরের সঙ্গে ছিলেন গাজোলের তৃণমূল বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস–সহ ব্লকের অন্য নেতাকর্মীরা। প্রচারের ফাঁকে মৌসম বলেন, ‘১০ বছর ধরে মানুষের পাশে আছি। উত্তর মালদার মানুষ আমাকে চেনেন। কিন্তু এবার বিজেপি–কে আটকানোর লড়াই। এবারে মানুষ জানেন দিদি বনাম মোদির লড়াই। বিজেপি সাম্প্রদায়িক শক্তি ও চিন্তাধারা পশ্চিমবঙ্গের আনার চেষ্টা করছে। পশ্চিমবঙ্গের সেকুলার ইমেজকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এটাকে যদি কেউ থামাতে পারেন তাহলে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরাও দিদির সৈনিক হিসেবে মানুষের পাশে রয়েছি। তবে গাজোল এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলি সমাধানের জন্য মানুষের সঙ্গে কথা বলে কাজ করব।’
মৌসম আরও বলেন, ‘তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে জেলার কংগ্রেস কর্মীদের বলে গিয়েছিলাম। আমি অনেক সমস্যার সামনাসামনি হচ্ছিলাম। কিন্তু দলনেত্রী আমাকে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করেছেন। এবার তৃণমূলের ফল খুবই ভাল হবে। দু–বারের সাংসদ মৌসম নুরের নির্বাচনী লড়াই এবার হয়তো কিছুটা কঠিন। কিন্তু তাকে কোনওভাবে আমল দিতে চাইছেন না মৌসম। এবারের দলীয় প্রতীক বদলেছে। বদলেছে নেতাকর্মীদের মুখ এবং নীতি। সবকিছুকে পিছনে ফেলে মানুষের আবেগ আর উচ্ছ্বাসকে পুঁজি করে প্রচারে নেমেছেন তৃণমূল প্রার্থী।
সকালে পান্ডুয়া এলাকার আদিবাসী গ্রামে নির্বাচনী প্রচারে যান মৌসম নুর। সেই গ্রামের নতুন মহিলা ভোটারেরা মৌসমকে সামনে পেয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কখনও হুডখোলা গাড়িতে, কখনও হেঁটে প্রচার করেন। চড়া রোদে প্রচারের ফাঁকে কোথাও লেবুর জল, আবার কোথাও চা এগিয়ে দিতে দেখা যায় উৎসাহী মানুষদের। গাজোলের দেওতলা এলাকায় আদিবাসী মহিলারা শামিল হয়ে যান প্রচারে। তাঁদের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নাচতে দেখা যায় মৌসম নুরকে। আরও রঙিন হয়ে যায় প্রথম দিনের নির্বাচনী প্রচার। অনেকেই তাঁদের সঙ্গে নাচ করার অনুরোধ জানান। আদিবাসী মহিলাদের এই আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁদের সঙ্গে নকশা করা কলসি মাথায় নিয়ে আর গলায় রঙিন কাগজের মালা পরে ধামসা–মাদলের তালে নেচে ওঠেন মৌসম নুর। তখন সূর্য মাথার ওপর। কড়া রোদ শুরু হলেও অক্লান্ত মৌসম। গ্রামবাসীদের আব্দার মেনে বেশ কিছুক্ষণ কাটান তাঁদের সঙ্গে।