ভোটের মুখে আবারও প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপি-আরএসএসের মনোমালিন্য। এবার বিজেপির কর্মীসভায় চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা দেখে সভার শুরুতেই বিরক্ত হয়ে সভাস্থল ছাড়লেন আমন্ত্রিত আরএসএস নেতারা। অন্যদিকে, ঠিক ভোটের ক’দিন আগে বুথের সভাপতিদের বক্তব্য শুনে দলের দুর্বল অবস্থা দেখে হতাশ হলেন দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব।
মঙ্গলবার বর্ধমান টাউন হল ময়দানে সাতটি বিধানসভাকে নিয়ে গঠিত বর্ধমান-দুর্গাপুর লােকসভা কেন্দ্রের বুথ-ভিত্তিক শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখেরা এই কর্মীসভায় যােগ দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীনেশ সিং, রাজ্য সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি, জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল কর্মকার-সহ জেলা নেতৃত্ব। পাশাপাশি, এই কর্মীসভায় জেলার আরএসএস
নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
গতকাল নির্দিষ্ট সময়ের তিনেক পরে সভা শুরু হয় চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থার মধ্যে। জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব বার বার উপস্থিত কর্মীদের শান্ত হওয়ার জন্য আবেদন জানালেও শেষ পর্যন্ত তাঁদের বাগে আনতে পারেনি। শেষে বিরক্ত হয়ে আমন্ত্রিত
আরএসএস নেতারা সভা ছেড়ে চলে যান। দলের জেলা নেতৃত্বের অনুরোধেও তাঁরা আর ফেরেননি।
বুথ-ভিত্তিক শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখ সভাপতির কাছে নিজের নিজের
এলাকায় ক’টা বুথ আছে, ওই বুথ এলাকায় ক’জন কর্মী আছেন, কত লােকসংখ্যা ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্ব জানতে চান। তাতে গলসি, ভাতার, আউসগ্রাম এলাকার কর্মীদের কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েন নেতৃত্ব। তারপরই দক্ষিণ বিধানসভা এলাকা, অর্থাৎ পূর্ব বর্ধমান শহরের অত্যন্ত দুর্বল অবস্থা শুনে হতাশ হয়ে পড়েন কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্ব।
তখন দলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল কর্মকার সভাস্থলে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, ‘খোদ দলের জেলা সভাপতির শহরে দলের যদি এমন করুণ অবস্থা হয়, তা হলে গােটা জেলার কী দশা!’ যদিও সে প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি জেলা নেতারা। এর থেকেই স্পষ্ট যে মুখে অমিত শাহরা যাই বলুক, বাংলায় এখনও নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করে উঠতে পারেনি বিজেপি।