কার্যত বাম-কংগ্রেস জোট ভেস্তে যাওয়ার মুখে। কিন্তু দুপক্ষই কৌশলে জোট ভাঙার দায় ঠেলছে বিপক্ষের কোর্টে। দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আসন সমঝোতার স্বার্থে ৪ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না বামেরা। জোটের জন্য বুধবার পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। না হলে ওই ৪ আসনেও প্রার্থী ঘোষণা করে দেবে বামেরা।
মঙ্গলবার বিমান বসুর এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে ৫ টি আসন ছেড়ে রাখল কংগ্রেস। ওই আসনগুলি হল, আসানসোল, তমলুক, আরামবাগ, বিষ্ণুপুর ও ডায়মণ্ড হারবার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেসের এই ‘সদিচ্ছা’ বামেদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিল। একইসঙ্গে বামেদের কথা বলার রাস্তাও বন্ধ করে দিল সোমেনবাবুর দল।
কারণ হিসাবে ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, বামেরা ৪ আসন ছাড়ার বিনিময়ে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ থেকে কংগ্রেস প্রার্থী সরিয়ে নিক, এমনটাই চেয়েছিলেন। সিপিএম মুখে বলেনি, কোন দুটি আসন তারা চাইছে। এখন ৫ টি আসন ছেড়ে কার্যত বামেদের সরাসরি ফাঁদে ফেলে দিয়েছে কংগ্রেস। ফলে বামেদের আর পিছিয়ে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রদেশ কংগ্রেসের ৪-এর বদলে ৫ আসনে মাত হয়ে গেছে আলিমুদ্দিন। সোমেনবাবুরা বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন, বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতায় তাঁরা কতখানি আগ্রহী। একইসঙ্গে যে ৫ টি আসন কংগ্রেস ছেড়েছে, সেখান থেকে লড়লে তাঁদের প্রার্থীদের জামানত জব্দ হওয়া নিশ্চিত ছিল। সেই আসনগুলিই ছেড়ে কংগ্রেস বিচক্ষণতার পরিচয় দিল। এই শিক্ষা আলিমুদ্দিন দীর্ঘদিন মনে রাখবে।
এখন বিমান বসুদের হাতে বিকল্প ২টি পথ খোলা থাকছে। এক, কংগ্রেসের প্রস্তাব মেনে নেওয়া। দুই, নিজেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়া। আর এটা করলে জোট ভাঙার দায় বামেদের ঘাড়েই পড়বে।
