প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবারই এই দাবি করে এসেছেন যে, তিনি দেশের ‘চৌকিদার’। তবে উল্টোদিকে বিরোধীদের কটাক্ষ, মোদী দেশের নয়, আম্বানি-আদানিদের চৌকিদার। মোদী সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে চলা এই ডামাডোলের সময়ই ইঙ্গিত মিলেছিল যে ভোটের আগে ‘চৌকিদার’ শব্দটিকেই গিমিক হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বিজেপি। যাবতীয় জল্পনাকে সত্যি করে রবিবারই মোদী তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে নিজের নামের আগে লিখে দেন ‘চৌকিদার’। তারপরই অমিত শাহ, রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে দেশের সব কর্মী সমর্থকেরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের নামের আগে বসিয়ে দেন ‘চৌকিদার’। আসলে মোদী সম্প্রতি ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ বলে যে ভোট প্রচার শুরু করেছেন, তারই অংশ এটা। তবে এবার সেই ক্যাম্পেনকে কটাক্ষ করে গুজরাটের পাতিদার নেতা ও সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া হার্দিক প্যাটেল টুইটারে নিজের নামের আগে লিখলেন ‘বেরোজগার’!
দীর্ঘদিন ধরেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বেকারত্বের অভিযোগ তুলে আসছেন হার্দিক। বারবার এই ইস্যুতে মোদীকে আক্রমণ করেছেন তিনি। তাই একদিকে যখন সব বিরোধীরা মোদীর এই ‘চৌকিদার’ শব্দটিকে নিয়ে আক্রমণ করতে ব্যস্ত, তখন হার্দিক প্যাটেল টুইটারেই তৈরি করতে চাইলেন এক নতুন ট্রেন্ড, যাতে চোখে আঙুল দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দেওয়া যায়, বেকারত্বের শিকার গোটা দেশ। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইটারে বলেন, ‘আপনি যতই চেষ্টা করুন মিস্টার মোদী, কিন্তু সত্যকে এভাবে চাপা দেওয়া যায় না। গোটা দেশ বলছে চৌকিদার চোর হ্যায়। আপনি সুষমাজিকেও টুইটারের নাম বদল করে চৌকিদার করতে বলুন। এখন দেখতে খুব বাজে লাগছে।’
‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ অভিযানকে কটাক্ষ করেছেন ইউপিএ সরকারের অর্থমন্ত্রী তথা শীর্ষ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘এখন আমিও চৌকিদার হয়ে গেছি। কারণ আমি যে চৌকিদারকে নিযুক্ত করেছিলাম তিনি নিখোঁজ। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি তিনি আচ্ছে দিনের সন্ধানে গেছেন।’ কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আবার এই প্রশ্ন তোলেন, ‘চৌকিদারের অবস্থা এরকম হলে দেশকে কে রক্ষা করবে?’ পাশাপাশি সমাজবাদী পার্টির প্রধান তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের কটাক্ষ, ‘চৌকিদারি ঘিরে বিতর্ক এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে তরুণরা আর কেউ এই পেশায় আসতে চাইছে না।’ তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবথেকে বেশি চর্চায় এখন ‘বেরোজগার’ হার্দিকই। এমনকি নেটিজেনদের অনেকেই এই সুযোগে বেকারত্ব নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।