প্রথা মেনেই শুরু হয় শিকার উৎসব। এই বসন্তে যখন রঙের ছোঁয়ায় রঙিন হইয়ে ওঠে প্রকৃতি ঠিক সেই সময়ই উত্তরবঙ্গের আদিবাসীদের মধ্যে অস্ত্রে শান দেওয়া হয়ে গিয়েছে। সেই সব অস্ত্র নিয়ে তাঁরা জঙ্গলে বেরোবেন, শিকার করবেন বন্য পশুপ্রাণী। এমনটাই বংশপরম্পরায় হয়ে আসছে। কিন্তু এবার একটু অন্য ছবি দেখা যাবে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে জঙ্গলে। শিকার উৎসবের নামে আর বন্য প্রাণী হত্যা করা যাবে না। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে গেছে কড়া নজরদারি। বন দফতরের কর্মীরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন পশু শিকারে লাগাম দিতে।
দোলের আগে থেকেই পশু শিকারের নেশায় মেতে ওঠেন আদিবাসী যুবকরা। পুলিশি প্রহরা, ধরপাকড় সত্ত্বেও পুরনো এই প্রথা বন্ধ করা যায়নি। নজর এড়িয়ে চোরা পথেই চলে শিকার। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, আইন এবং নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করেন না আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। পশুপাখি মারাটা বংশপরম্পরাগত কোনো প্রথা হতে পারে না। এতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রশ্নের মুখে পড়ে। লঙ্কাপাড়া রেঞ্জ অফিসার বিশ্বজিৎ বিশয়ী বলেছেন, ‘‘শিকার উৎসব বলে কিছু হয় না। আমাদের বুঝতে হবে পরিবেশের জন্য বন্যপ্রাণ অপরিহার্য। এই সময়ে যদি কাউকে জঙ্গলে প্রবেশ করতে দেখা যায়, তাহলে তাকে গ্রেফতার করা হবে। এই নিয়ে গ্রামে গ্রামে সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে। আমার আবেদন দোলে সকলে আনন্দ করুন, কিন্তু জঙ্গলে ঢুকবেন না”। শিকার করতে দেখা গেলে বা ধরা পড়লে অভিযুক্তের ৩ থেকে ৭ বছরের জেলও হতে পারে।
আজ, থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত জঙ্গলে ঢোকার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বনকর্মীরা। জঙ্গল ঘিরে চলবে পুলিশি টহলদারি। এছাড়া শিকার বন্ধ করার জন্য গ্রামে গ্রামে চলবে প্রচার। বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করেও থাকবেন বন দফতরের আধিকারিকরা। বন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, অনেক সময় দেখা যায় শিকার উৎসবে ভিন রাজ্যের আদিবাসীরাও জলদাপাড়ায় এসে শিকার করেন। এই ব্যাপারেও গ্রামের মানুষদের সজাগ করছেন তাঁরা।