একদিকে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে শুধু অপুষ্টির কারণে মৃত্যু হচ্ছে শতাধিক শিশুর। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার সময় অপুষ্টিকে সমূলে উৎখাতের ডাক দিয়েছিলেন মোদী। বিজেপির ইস্তাহারেও ছিল অপুষ্টি নির্মূলের আহ্বান। কিন্তু মোদী জামানায় গত পাঁচ বছরে চিত্রটা পাল্টায়নি একটুও।
নরেন্দ্র মোদী দেশের ক্ষমতায় আসার পরেও শুধু অপুষ্টির কারণে হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছে ভারতে। কেবল মোদীর নিজের কেন্দ্র বারানসীর চিত্রই চমকে ওঠার মতো। সেখানে ৫৯.৫ শতাংশ শিশু রক্তহীনতায় আক্রান্ত, ৪৫.৯শতাংশ শিশুর বয়সের তুলনায় ওজন কম এবং ৪৩.১ শতাংশ শিশু স্টান্ডে আক্রান্ত। ২০১৪ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৫৮৫০। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৬১২১-এ। অর্থাৎ প্রতি বছর সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, শুধু মোদীর নিজের কেন্দ্র বারাণসীতেই।
মোদি জামানায় অনাহার এবং অপুষ্টির তালিকায় ইরাক, নেপাল, বাংলাদেশেরও থেকেও অনেক পিছিয়ে আমাদের ভারত। ‘আচ্ছে দিন’এর দাবি নিয়ে গালভরা প্রচার চলছে প্রতিনিয়ত। কাগজ জোড়া বিজ্ঞাপন, টিভিতে প্রচার। ‘আচ্ছে দিন’এর ঢক্কানিনাদ বাজাতে দিনরাত ব্যস্ত সরকার। আদৌ কি আচ্ছে দিন এসেছে? তথ্য বলছে অন্যকথা। গত একবছর আগেও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে অনাহার এবং অপুষ্টি নিয়ে তৈরি তালিকায় ভারত ছিল ৯৭-এ। কিন্তু এই এক বছরের মধ্যে সেই ছবির কোনও উন্নতি হয়নি। বরং আরও নীচে নেমেছে। তালিকায় ৯৭ স্থানে ছিল। এখন ১০০ তে নেমে এসেছে। ভারতের পরে আর এক প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান আছে ১০৬ নম্বর স্থানে। কিন্তু সবথেকে বড় অস্বস্তির কারণ, বাংলাদেশের স্থান ভারত থেকে অনেক উপরে। ৮৮ তে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। নেপালের স্থান ৭২-এ। আর শ্রীলঙ্কা এবং মায়ানমারের অবস্থান যথাক্রমে ৮৪ ও ৭৭ নম্বরে। আশ্চর্যজনকভাবে উত্তর কোরিয়া এবং ইরাক অবস্থান করছে ৯৩ ও ৭৮ নম্বরে।
একদিকে হাজার হাজার শিশু অপুষ্টির শিকার। মোদীর নিজের কেন্দ্রেই বেআব্রু যাবতীয় রিপোর্ট। ইস্তেহারে যে অপুষ্টি দূরীকরণের ডাক মোদী দিয়েছিলেন তা পালনে তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ। বিভিন্ন রিপোর্ট, সমীক্ষা সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।