ভোটের মুখে দল ভাঙানোই একমাত্র কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির। আর এই নিয়ে ক্ষুব্ধ দলের নেতা কর্মীরাই। সংসদে দাঁড়ানোর মতো যোগ্য প্রার্থী না থাকার জন্যই বিজেপিকে দল ভাঙাতে হচ্ছে, দিলীপ ঘোষের এহেন সাফাইয়ের পরেও ক্ষোভ আরও বেড়েছে। বিজেপির দলীয় কর্মীদের মনে হচ্ছে, পুরনো কর্মীদের পাত্তা দিচ্ছে না বিজেপি নেতৃত্ব। এভাবে দলের দরজা খুলে দেওয়ায় সন্তুষ্ট নয় আরএসএস-ও। তাদের মতে, এইভাবে দল ভাঙানোর বার্তা ইতিবাচক নয়। আরএসএস নেতারা মনে করছেন, অন্য দলের উচ্ছিষ্টদের নিয়ে ভোটে লড়াকে ভালো চোখে দেখছেন না সাধারণ মানুষ। সব মিলিয়ে অন্য দল ভাঙানোর কারণে গোষ্ঠীকোন্দল শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই।
বিজেপি সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকের পর ঘোষণা শুরু হবে বিজেপির প্রার্থীতালিকা। কিন্তু অনেক আগে থেকে জমা হওয়া অনেক দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম বদলে যাচ্ছে শেষ মুহূর্তে দলে যোগ দেওয়া অন্য দলের নেতাদের কারণে। এটাই দলীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের কারণ। তাঁরা মনে করছেন, অন্য দলের যারাই বিজেপিতে আসছে, প্রত্যেকের আসল লক্ষ্য প্রার্থী হওয়া। কারণ বাংলা তৃণমূল থেকে অর্জুন সিংকে যদি প্রার্থী করা হতো, তিনি বিজেপিতে আসতেন না। দীনেশ ত্রিবেদীর নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই অর্জুন সিং বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুধু মাত্র প্রার্থী হতে পারবেন না বলে। তাঁদের আরও ক্ষোভ, যারা দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত, দুঃসময়েও দলের সঙ্গ ছাড়েননি তাঁদের বাদ দিয়ে নতুনদের প্রার্থী করা হচ্ছে।
দল ভাঙানো নিয়ে কেন চরম অসন্তোষ গেরুয়া শিবিরে? প্রথমত যাচাই করার সুযোগ না থাকায় এই পদ্ধতিতে বহু বেনোজল ঢুকে পড়ছে। দ্বিতীয়ত, অতীতে এরকম অন্য দল থেকে আসা নেতাদের নিয়ে বিশেষ লাভ হয়নি বলেই মনে করছে বিজেপির একাংশ। বরং সাধারণ মানুষ যারা বিজেপিকে অন্য দলের থেকে আলাদা ভেবে সমর্থন দিতেন, তাঁরা যখন দেখছেন ওই অন্য দলগুলি থেকেই দলে দলে সেইসব নেতারা বিজেপিতে ঢুকে পড়ছেন তখন একটা নেতিবাচক মনোভাব তৈরিও হচ্ছে। কিন্তু এসব বোঝার চেষ্টা করছেন না বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলে অন্য দল ভাঙানোই এখন তাঁদের একমাত্র কাজ।
