ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রের হাল বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বছর পঞ্চম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, বাংলাই এখন শিল্পের একমাত্র গন্তব্য। বাংলা মানেই বাণিজ্য। তাঁর দাবি যে মোটেও ভ্রান্ত নয়, আবারও প্রমাণ মিলল তার। এবার বাংলার প্রাণকেন্দ্র কলকাতায় এসে এখানকার বাণিজ্য-পরিবেশের প্রশংসা করলেন ভারতে আজারবাইজানের রাষ্ট্রদূত আশরাফ শিখালিয়েভ। দেশের বিভিন্ন রাজ্য ঘোরার পর তাঁর মত বাংলাই সেরা।
গতকাল কলকাতায় বণিকসভা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএনসিসিআই) আয়োজিত এক সভায় যোগ দিয়ে আশরাফ শিখালিয়েভ বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরেছি। এদেশে থাকলে মনে হয় যেন নিজের দেশেই রয়েছি। পূর্বাঞ্চলের মধ্যে কলকাতায় ব্যবসা-বাণিজ্যের খুব ভাল সুযোগ রয়েছে।’ সেইসঙ্গে আজারবাইজানে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পরিবহণ, কৃষি, পেট্রোকেমিক্যালস, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, সিনেমা, পর্যটন-সহ আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে লগ্নি করা যেতে পারে।
গতকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতে আজারবাইজানের রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী ইললরা শিখালিয়েভা, বিএনসিসিআই প্রেসিডেন্ট সত্যম রায়চৌধুরী, বিএনসিসিআই-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শুভ্র চন্দ্র। সত্যম বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিল্পবাণিজ্যে অনেক বদল এসেছে। প্রযুক্তির হাত ধরেও ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই প্রযুক্তি অনেক সময় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সহজে যাতে সেইসব চ্যালেঞ্জ সামলানো যায়, সে ব্যাপারে বণিক সংগঠন সব সময় তৎপর। সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে সাহায্যের চেষ্টা করি। তাদের পরামর্শ দিই।’
আজারবাইজানে কোন শিল্পে লগ্নি করার সম্ভাবনা বেশি, বিনিয়োগের পরিবেশ কেমন, সে ব্যাপারে এখানকার শিল্পোদ্যোগীরা আশরাফ শিখালিয়েভের কাছে জানতে চান। ছিল ন্যাসকম, ডেটা সায়েন্সেসের মতো সংস্থার প্রতিনিধিরা। আশরাফ শিখালিয়েভ জানান, লগ্নি করার পরিবেশের হিসেবে বিশ্বব্যাঙ্কের সূচকে আজারবাইজান রয়েছে ২৫-এ। সেখানে ব্যবসা করার ভাল পরিবেশ রয়েছে। সরকারও একগুচ্ছ ভাল কর্মসূচী নিয়েছে।
তিনি জানান, সে দেশে সিনেমার শুটিং করারও খুব ভাল ভাল লোকেশন রয়েছে। পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গল— সবই রয়েছে। এবং ইউরোপের অন্য দেশের তুলনায় খরচও অনেক কম। তাছাড়া সেখানে জিনিসপত্রের দামও কম। তাই শুটিংয়ের জন্য ওই দেশকে বেছে নেওয়া যেতে পারে। এখন ভারতের অনেক সিনেমার শুটিংও হচ্ছে সেখানে। এক প্রশ্নের জবাবে শিখালিয়েভ বলেন, ‘আপাতত সেখানে শুটিংয়ের জন্য কোনও উৎসাহ ভাতা দেওয়া হয় না। তবে এ নিয়ে ভেবে দেখা হবে। তবে সেখানে খরচ অনেক কম বলে শুটিংয়ের জন্য সে দেশ আলাদা গুরুত্ব পেতে পারে।’