নিউজিল্যান্ডে নজিরবিহীন নাশকতার অন্যতম কান্ডারী সে। ভরা মসজিদে গুলি চালাতে চালাতেই খুন-জখম-আর্তনাদের ফেসবুক লাইভ করে সংবাদের শিরোনামে। কিন্তু তবুও চোখ-মুখ অদ্ভুত রকম ভাবে শান্ত তার। একেবারেই নির্লিপ্ত। লেশমাত্র অনুতাপের চিহ্নও নেই সেই মুখে। বরং চিত্র সাংবাদিকদের সামনে রীতিমতো মুচকি হাসির সঙ্গে পোজ দিল সেই ব্রেন্টন ট্যারান্ট। এই মুহূর্তে গোটা দুনিয়া পরিচিত যে নামটির সঙ্গে।
ট্যারান্টের মেশিনগান থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসা গুলিতেই প্রাণ গেছে ৪৯ জনের। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন আরও অনেকে। রক্তাক্ত হয়েছে নিউজিল্যান্ড। শনিবার তাই আদালতে তোলা হয় ২৮ বছর বয়সি অস্ট্রেলীয় ট্যারান্টকে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এদিন দক্ষিণ অইল্যান্ডে হাইকোর্টে কয়েদির পোশাকে হাতকড়া লাগানো অবস্থায় বিচারকের সামনে নিয়ে আসা হয় তাকে।
তবে বিচারকের সামনে একটিও কথা বলেনি ট্যারান্ট। গোটা বিচার পর্বেই তাকে ঠোঁট চেপে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে কাঠগড়ায়। তবে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মাঝে মাঝে শুধু হাতের ইশারায় বোঝাবার চেষ্টা করছিল, সব ঠিক আছে। মসজিদের ভিতর হত্যালীলা চালানোর সময় যে বিভৎসতা দেখা গিয়েছিল, এদিন যেন সব কিছুই উধাও। পুরো সময়টাই শান্ত ছিল সে।
এমনকি পুলিশ আধিকারিকরা যখন হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নিয়ে আসছিলেন ব্রেন্টনকে, তখন আদালত চত্ত্বরেই ছিলেন কয়েকশো সাংবাদিক। ছিলেন চিত্র সাংবাদিকরা। ট্যারান্টকে দেখেই ছবি তুলতে তৎপর হয়ে উঠেন তাঁরা। ‘হতাশ’ করেননি ট্যারান্টও। মুচকি হেসে পোজও দেয়। তার পরই বিচারকক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। বিচারক তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী শুনানি ৫ এপ্রিল।
জানা গেছে, জামিনের জন্য কোনও আবেদন জানানো হয়নি ট্যারান্টের তরফে। তার নাম গোপন রাখারও কোনও আবেদন ছিল না। তবে বিচারক পল কেলার হামলাকারী ট্যারান্টের ছবি তোলা ও ফুটেজ নেওয়ার অনুমতি দিলেও তিনি বিচার সম্পর্কিত অধিকার বজায় রাখতে ছবি প্রকাশের সময় মুখ ঝাপসা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, নিউজিল্যান্ডের এক স্থানীয় সংবাদপত্রের তরফে জানা গেছে, বন্দুক হামলার কারণ জানিয়ে ইন্টারনেটে একটি ইস্তেহার প্রকাশ করেছিল ট্যারান্ট। তাতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বিদেশিদের থাকতে দেওয়ার বিরুদ্ধেও নিজের চরমপন্থী অবস্থানের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছিল সে। শুধু তাই নয়, গোটা ইস্তেহার জুড়েই ছিল চরম দক্ষিণপন্থী মতাদর্শের কথা।