যাবতীয় জল্পনাকে সত্যি করে আবারও জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে আড়াল করে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে চিন। বুধবার চিনের ভেটোতেই কার্যত আটকে গেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মাসুদকে ‘গ্লোবাল টেররিস্ট’ ঘোষণার কাজ। তবে তাতে দমে না গিয়ে এবার বিকল্প রাস্তায় জইশ প্রধানকে কোণঠাসা করার চেষ্টা শুরু করল ইউরোপের দেশগুলি। মাসুদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিল ফ্রান্স। ফরাসি সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলিকেও একই আর্জি জানানো হবে। একই সঙ্গে প্যারিসের ঘোষণা, সন্ত্রাস দমনে সব সময়ই ভারতের পাশে ছিল এবং থাকবে ফ্রান্স।
ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ, অর্থ ও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ফরাসি সরকার। তাতে বলা হয়েছে, ফ্রান্সে মাসুদ আজহারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওই বিবৃতিতে স্পষ্টই বলা হয়েছে, ‘নির্দিষ্ট আইনে মাসুদ আজহারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে’। ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে পুলওয়ামায় জঙ্গী হানার প্রসঙ্গও। বলা হয়েছে, ‘পুলওয়ামায় জঙ্গী হানায় অন্তত ৪০ জন সিআরপি জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মহম্মদ। এই জইশকে ২০০১ সাল থেকেই জঙ্গী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রসংঘ।’
২০১৬ সালে পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে জঙ্গী হানার পর থেকেই আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রসংঘ। কিন্তু বার বার তা আটকে গিয়েছে পাকিস্তানের ‘মিত্র’ চিন ভেটো দেওয়ায়। পুলওয়ামা হামলার পর ফের চাপ বাড়ে পাকিস্তানের ওপর। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য তিন দেশ আমেরিকা, ফ্রান্স ও ব্রিটেন নতুন করে প্রস্তাব পেশ করে। কিন্তু এবারও পথের কাঁটা সেই বেজিংই। ফলে এই নিয়ে চতুর্থ বার মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘোষণার প্রক্রিয়ায় প্রাচীর তুলে দিল চিন। তার পরই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ঘোষণা করে অন্য পথে পাকিস্তান ও আজহারের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করল ফ্রান্স।
শুধু তাই নয়। প্যারিসের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, মিত্র দেশগুলিকেও মাসুদ আজহারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আর্জি জানাবে ফ্রান্স। এমনকি ইউরোপে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত জঙ্গী সংগঠনের তালিকায় জইশকে অন্তর্ভুক্তির দাবিও জানানো হবে সেই দেশগুলির কাছে।