পাড়ার মোড়ের ছাপোষা এক মুদি দোকান। তাকে ঘিরেই বর্তমান সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিকাঠামো মিলিয়েই এই ছবিকে বড়পর্দায় আনতে চলেছেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। আগামী ১৫ মার্চ দেখা যাবে শঙ্কর মুদি বড়পর্দায়। সময় যত এগোচ্ছে মানুষ সুবিধাভোগী হয়ে উঠছেন। বিদেশ থকে বড় পুঁজি আসছে বড় বড় শপিং মল তৈরি হচ্ছে । সেখানে মানুষ এক জায়গায় সমস্তটা পেয়ে যাচ্ছেন ফলে মার খাচ্ছে ছোট ব্যবসায়ী। একটা সামাজিক ব্যবস্থার পতন ঘটছে। একদিন দেখতে দেখতে এই পাড়ার মোড়ের দোকান গুলো হারিয়ে যাবে। এই প্রেক্ষাপটেই এই ছবি।
পরিচালক অনিকেত বলেন, ‘‘আসলে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট বলে একটা ব্যাপার রয়েছে। বিদেশ থেকে বড় বড় পুঁজি আমাদের এখানকার ব্যবসায়ীদের জন্য আসছে। বড় ডিপার্মেন্টাল স্টোর তৈরি হচ্ছে। ব্র্যান্ড আসছে। ফলে দর্জি, নাপিত, মুদি— এদের ওপর সাংঘাতিক আঘাত নামছে। এই দোকানগুলো আর কিছু দিনের মধ্যে শুকিয়ে মরে যাবে। এটা মনে হয়েছিল একটা অর্থনৈতিক ব্যাপার। এরা তো সমাজিক ভূমিকাও পালন করে। পাড়ার কেউ অসুস্থ হলে দরকারে ডাক্তার ডেকে আনে। রক্ত দেয়। আমরা পাড়ায় সিগারেট খেতে পারতাম না। কারণ ওরাই ছিল কাকু, জেঠু। ফলে অর্থনৈতিকের সঙ্গে সামাজিক ব্যাপারও। গল্পটা ১৯৮৯ থেকে শুরু। ২০০৮-’০৯ পর্যন্ত তারিখ দিয়ে দিয়ে আছে”।
২০১৭-এ কান চলচ্চিত্র উৎসবে মার্কেট প্রিমিয়ার হয়েছিল এই ছবির। এই ছবিতে কৌশিক ছাড়াও কাঞ্চন মল্লিক, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, শ্রীলা মজুমদার, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, কাঞ্চনা মৈত্র, প্রিয়ঙ্কা সরকারের মতো শিল্পীরা অভিনয় করেছেন। সমৃদ্ধ এই ছবি। এ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সদ্য প্রয়াত গায়ক প্রতীক চৌধুরীও। পাড়ার দোকানে শুধু জিনিস কেনাবেচাই হয় না। তা সুখ-দুঃখের গল্প করার একটা আস্তানাও বটে।
এই গল্পের শঙ্কর মুদি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “বছর দেড়, দু’য়েক আগে শুটিং হয়ে গিয়েছিল। ফাইনালি রিলিজ হচ্ছে ছবিটা, এটাই আনন্দের। আমার চরিত্র শঙ্কর মুদি। পাড়ার মুদির দোকান। অঞ্চলের অভিভাবকের মতো। আসলে বড় শপিং মল হয়ে গিয়ে পার্সোনাল টাচ হারিয়ে যাচ্ছে। পোস্টারে লেখা রয়েছে বটে রাজনৈতিক ছবি, তার বাইরেও এটা আমার কাছে বিরাট একটা সামাজিক ছবি”।