১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক জালিয়াতি করে ভারত ছাড়ার পর লন্ডনেই আশ্রয় নিয়েছেন পলাতক ব্যবসায়ী নীরব মোদী। তিনি এখন পশ্চিম লন্ডনে থাকছেন বলেই খবর। শনিবার লন্ডনের ইউকে ডেইলি টেলিগ্রাফের ভিডিওতে নীরব মোদীকে দেখা গেছে। পিএনবি জালিয়াতি কান্ডের পর আজই প্রথম নীরব মোদীর ভিডিও সামনে এসেছে। জানা গেছে, নিজের ইচ্ছে মতো যা খুশি করছেন মোদী। নিশ্চিন্ত জীবনযাপন করছেন। লন্ডনে নতুন কোম্পানি খুলে চুটিয়ে হীরের ব্যবসাও করছেন।
লন্ডনের অভিজাত বন্ড স্ট্রিট এলাকাতেই এখন নীরব মোদীর ব্রিটিশ সংস্থার ‘সরকারি ঠিকানা’। তবে রেকর্ড ঘাঁটলে দেখা যাবে, বারবার বদলেছে সংস্থার ঠিকানা। ক্রমাগত পাল্টে গিয়েছে সংস্থার বিদেশি ডিরেক্টরদের নামও।
রেকর্ড ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, নীরবের সংস্থাটির ঠিকানা ও ডিরেক্টর বারবার পাল্টানো হয়েছে। যখন সংস্থাটি নথিভুক্ত হয়, ঠিকানা ছিল ‘দত্তানি বিজ়নেস সেন্টার, স্কটিশ প্রভিডেন্ট হাউস, কলেজ রোড, হ্যারো’। ডিরেক্টরের নাম হিমাংশু ত্রিবেদী। ঠিকানা শঙ্কর লেন, কান্ডিভোলি, মুম্বই। ২০১৪-র ১৪ নভেম্বর থেকে তিনি সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন।
বর্তমানে সংস্থার নাম ‘নীরব মোদী লিমিটেড’। স্পেশ্যালিটি স্টোর, অর্থাৎ বিশেষ বিশেষ বিপণিতে এই সংস্থাটি ‘গয়না ও ঘড়ি’ বিক্রি করবে বলে রেজিস্ট্রেশন নথিতে লেখা রয়েছে। সংস্থাটি নথিভুক্ত করা হয় ২০১৪-র ১৩ নভেম্বর। ২০১৬-র ১৫ জানুয়ারি, শেয়ারহোল্ডারদের তালিকা পেশ করা হয়। ২০১৮-র ১ ডিসেম্বর আয়কর রিটার্নও দাখিল করেছে সংস্থাটি। এ বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসেবও দাখিল করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে নীরবের বিরুদ্ধে। গোয়েন্দাদের টনক নড়ার আগেই দেশ ছেড়ে পালান তিনি। ইন্টারপোলের রেড কর্ণার নোটিশও জারি হয়েছে তাঁর নামে। তবে লন্ডনে বেশ নিশ্চিন্তেই রয়েছেন মোদী। সেখানে অক্সফোর্ড স্ট্রিটে ৭২ কোটি টাকার বেশি দামের তিন বেডরুমের ফ্ল্যাটেই এখন থাকছেন মোদী। সোহোতে নতুন করে হীরের ব্যবসাও শুরু করেছেন। এই ব্যবসা মোদী ২০১৮ সালের মে মাসে শুরু করেছেন বলে খবর।
ডেইলি টেলিগ্রাফের পক্ষ থেকে নীরব মোদীর একটি সাক্ষাৎকার ভিত্তিক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে ৪৮ বছরের ব্যবসায়ীকে দেখা যাচ্ছে। মোদীকে যখন ক্যামেরাবন্দি করা হয়, তখন তাঁর পরনে ছিল গোলাপি শার্ট। তার ওপর চাপানো কালো অস্ট্রিচ হাইড জ্যাকেট। এ হেন জ্যাকেটের দাম ভারতীয় টাকায় ৯ লক্ষের কাছাকাছি। যার অর্থ লন্ডনে বিলাসবহুল জীবনযাপনেই মোদী এখনও অভ্যস্ত হয়ে রয়েছেন। ভারত থেকে টাকা লুঠ করে বিদেশে বহাল তবিয়তে ব্যবসা করে খাচ্ছেন। তাঁর পালিয়ে যাওয়ার পিছনে যে মোদী সরকারের যথেষ্ট হাত আছে তা বারবার বলেছেন বিরোধীরা৷ কালকের ভিডিওতে নীরবকে দেখতে পাওয়ার পরে কংগ্রেস মোদীকে কটাক্ষ করে বলে, জালিয়াত পুনর্বাসন যোজনা চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী৷