মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে উন্নতির শিখরে উঠেছে বাংলা। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এবার সেই বাংলা পৌঁছে গেল সুদূর ব্রিটেনে। লন্ডন এবং ডার্বিতে আয়োজিত ইউকে স্কিলস পলিসি সেমিনারে অংশগ্রহণ করল পশ্চিমবঙ্গ।
গত ৫ থেকে ৭ মার্চ লন্ডন এবং ডার্বি শহরে আয়োজিত এই ‘ইউকে স্কিলস পলিসি সেমিনার’ তথা স্টাডি ট্যুরের থিম ছিল ‘স্কিলস অ্যান্ড ডিবেট: ডিসরাপশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’। সেখানে ভারত, নাইজিরিয়া, নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং উজবেকিস্তানের ৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ওই প্রতিনিধি দলের মূল উদ্দেশ্যই ছিল, পেশাদারি দক্ষতা ক্ষেত্রের নানান সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা এবং সেগুলির মোকাবিলায় ব্রিটেনের সহযোগিতা চাওয়া। সেই লক্ষ্যে ব্রিটিশ ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন, ওইসিডি এবং সেন্টার ফর জাস্টিস-এর সঙ্গেও আলোচনায় বসেছিল ওই প্রতিনিধি দলটি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেখানে যোগ দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রযুক্তি শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রোশনি সেন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর দেবাঞ্জন চক্রবর্তী।
সেমিনার শুরু আগেরদিন সন্ধ্যায় ব্রিটেনে বসবাসকারী বাঙালিদের সংগঠন বেঙ্গল হেরিটেজ ফাউন্ডেশন এবং লন্ডন শারদ উৎসবের প্রতিনিধিরা রোশনিদেবী এবং দেবাঞ্জনবাবুর দেখা করেন। লন্ডনের ওই বৈঠকে ছিলেন ব্যারোনেস উষা প্রসার, কমনওয়েল্থ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের সিইও অ্যালান গেমেল এবং ইউকেআইবিসি’র সিওও কেভিন ম্যাককোল। ওই বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। প্রথমেই বাংলা এবং বাঙালিকে আন্তর্জাতিক স্তরে কী করে যুক্ত করা যায় তা নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানান লন্ডন শারদ উৎসবের নবীন প্রজন্মের সদস্যরা। তারা জানান, ব্রিটেন থেকে বাংলায় পড়াশোনা করতে গেলে বা বাংলার পড়ুয়ারা ব্রিটেনে পড়তে এলে, তা দু’দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। বিসিআইয়ের ডিরেক্টর দেবাঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, ব্রিটিশ কাউন্সিল আগেই এই ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু তার পরিসর আরও বাড়ানোর প্রয়োজন।
বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে অংশগ্রহণের বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতাও জানান বেঙ্গল হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি তাঁরা ব্রিটেন ও বাংলার মধ্যে কী করে প্রতিভার আদানপ্রদান করা যায় তা নিয়েও কথা বলেন। সাধারণ তথ্যপ্রযুক্তি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং অটোমেশন শিল্পে বাঙালি প্রতিভা এবং মেধার জন্য কতটা সম্ভাবনা রয়েছে, সেটাও আলোচনায় উঠে আসে। সবশেষে দু’দেশের মধ্যে সংস্কৃতিগতভাবে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়টি আলোচনাচক্রে তুলে ধরা হয়। দুর্গাপুজো, নদী উৎসব ও লন্ডন ল্যুমিয়ের ফেস্টিভ্যালের মতো আলোর উৎসবের মাধ্যমে কী করে দু’দেশের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান বাড়ানো যায়, তা নিয়ে কথা হয়। লন্ডন ল্যুমিয়ের ফেস্টিভ্যালের সঙ্গে চন্দননগরের আলো শিল্পীদের যুক্ত করা যায় কি না, সেবিষয়েও আলোচনা হয়।