সাম্প্রদায়িকতা ও হিংসার ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলছে যোগীর রাজ্যে। বুধবারই লখনউয়ের ডালিগঞ্জে কাশ্মিরী হওয়ার ‘অভিযোগ’-এ দুই ফল বিক্রেতার ওপর চড়াও গেরুয়া শিবির। আর ওইদিনই খবরের চ্যানেলে দেশে কর্মসংস্থানের অভাবের প্রসঙ্গ তােলায় বেধড়ক মারধর করা হল এক যুবককে। সঙ্গে জুটল ‘জঙ্গী’ আখ্যাও! বুধবার পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরের ওই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে খোদ শাসক দল বিজেপি কর্মীদের দিকেই।
ওই অনুষ্ঠানে দর্শকাসনে ছিলেন ছাত্রটি। অভিযোগ, সেখানে
তথাকথিত ‘সরকার বিরোধী’ কথা বলায় আচমকা তার ওপর চড়াও হয় বিজেপি কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিষয়টি ক্যামেরাবন্দী হচ্ছে জেনেও বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ করতে দেখা যায়নি তাদের। ছড়িয়ে পড়েছে ঘটনার সেই ভিডিও ফুটেজ। ভিডিওটিতে অভিযুক্তদের মুখ পরিষ্কার বোঝা গেলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলেই খবর। যদিও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল পুলিশ।
মার খাওয়ার পর পরই স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে নিগ্রহের বিবরণ দিতে দেখা যায় ছাত্রটিকে। হাঁফাতে-হাঁফাতে ছাত্রটিকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি শুধু বলেছিলাম ভারতে চাকরির অভাব রয়েছে। এর পরেই হামলাকারীরা বলতে শুরু করে আমি নাকি জঙ্গী! আমি ভারত তথা বিজেপি-বিরোধী!’
ঘটনার তীব্র নিন্দা করে হায়দ্রাবাদ থেকে ‘এমআইএম’-এর প্রেসিডেন্ট আসাদুদ্দিন ওয়াইসির কটাক্ষ, “উন্নয়ন প্রসঙ্গে মোদীর হয়ে কথা বলার মুখ যে তাঁদের নেই, তা বিজেপি কর্মীরা ভাল করেই জানেন। তাঁরা একমাত্র কাউকে ‘জঙ্গী’ আখ্যা দিয়ে মারধরই শুধু করতে পারে।”
প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পর বেকারত্ব কমানাের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পূরণের ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের এই আক্রমণের মুখে প্রায়ই পড়তে হয় শাসক দলকে। এবার লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের অন্যতম অস্ত্রই এই বেকারত্ব ইস্যু। তাই এই ঘটনা প্রমাণ করল যে শুধুমাত্র বিরোধীরাই নয়, তিতিবিরক্ত দেশের জনগণও। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হামলার ভয় না পেয়েই তারা ক্রমশ মুখ খুলতে শুরু করেছেন।