দেশের জনগণ নয়, আসন্ন লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীকে জেতাতে পারে একটি চেয়ারই! ইতিমধ্যেই মোদীর কাছে পৌঁছে গেছে কানপুরের নেতাদের চিঠি। যার সারমর্ম, মোদীজি কানপুরে এসে দয়া করে এই চেয়ারেই বসবেন। এতেই কাজ হবে। ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি। আর আপনিও ফের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
হ্যাঁ, বালাকোটে বিমানহানা যত জোরালো বলেই দাবি করা হোক, আর মৃতের সংখ্যা নিয়ে নেতারা যত হুংকারই দিন না কেন, বিজেপির কুর্সির ভয় কিন্তু যাচ্ছে না। আর দিল্লীর কুর্সি রাখতে চাই কানপুরের নেতাদের ভরসা আস্ত একটা কাঠের চেয়ার। আজ, শুক্রবার কানপুরে আসছেন মোদী। তাই মোদীর জন্য কাচের ঘরে রাখা সেই কুর্সি ইতিমধ্যেই ঝেড়েমুছে, পালিশ করা হয়েছে।
কিন্তু দেশের জনতাকে ছেড়ে হঠা নিষ্প্রাণ কাঠের চেয়ারকে ভরসা করতে হচ্ছে কেন? কীসের মাহাত্ম্য চেয়ারে? কানপুরের বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, ২০১৩-র ১৯ অক্টোবর কানপুরের ইন্দিরানগরের মাঠে ছিল ‘বিজয় শঙ্খনাদ’ সমাবেশ। ২০১৪-র এপ্রিলে কয়লানগর মাঠে সভা। দুটোতেই ডেকোরেটরের আনা ওই চেয়ারেই বসেছিলেন মোদী। তারপরেই ভোট, আর ভোটে জিতেই প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
তখনই বিষয়টি নজরে পড়ে কানপুরের বিজেপি সভাপতি সুরেন্দ্র মইথানির। দলের অন্যরা তখন মোদীর চেয়ার নিলাম করার তালে ছিলেন। আটকে দেন মইথানিই। তিনিই চেয়ারটাকে হেরিটেজ ঘোষণা করেন। ২০১৬-র ডিসেম্বরে নিরালানগর মাঠে সভা করেন মোদী। বসেছিলেন ওই চেয়ারেই। তার পরেই ২০১৭-য় বিধানসভা ভোটে বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। দু-দু’বার ভোটে জেতা একই চেয়ারে বসে! নির্ঘাত পয়া চেয়ার।
এরপরই পালিশ করে দলের কানপুর অফিসে একটা কাচঢাকা জায়গায় রেখে দেওয়া হয় চেয়ারটিকে। নতুন কেউ দলে এলেই তাঁকে শোনান হয় কিসসা কুর্সি কা। আর ওই চেয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে তোলা হয় সেলফি। মইথানি বলছেন, ‘২০১৩ সাল থেকে আগলে রেখেছি। ইচ্ছে এবারও ওই চেয়ারে বসুন মোদীজি। আমি নিশ্চিত, ওই চেয়ারে বসলে এবারও মোদী এবং দলের সৌভাগ্য ফিরবে।’
এর থেকেই স্পষ্ট যে, বিজেপি সম্পর্কে দেশবাসীর মনে জমতে থাকা ক্ষোভ দেখে চিন্তিত দলের নেতারা। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ভোটে জিতে ফের ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয় মোদীর। তাই ওই চেয়ারটিকেই এখন ‘অন্ধ’বিশ্বাস করতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে।