ভারতীয় উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নামার পর ঠিক কি হয়েছিল সেই বিষয়ে কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান পাওয়া যায়নি। এবার একটা সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সূত্রে সেই তথ্যই উঠে এল। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র দাবি, তাদের প্রতিনিধি হোরান গ্রামে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানেই খোঁজ পেয়েছেন এমন এক জনের, যিনি আকাশে ‘ডগফাইট’ থেকে শুরু করে অভিনন্দনের প্যারাসুটে নেমে আসা এবং পাক সেনার হাতে ধরা পড়া পর্যন্ত পুরো ঘটনা দেখেছেন। সেই ব্যক্তির নাম মহম্মদ কামরান। তিনিই গোটা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমান ধ্বংস হওয়ার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের হোরান গ্রামে নেমেছিলেন অভিনন্দন বর্তমান। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে। কামরানই জানান, ‘‘আকাশে ছ’টি যুদ্ধবিমানের যুদ্ধ দেখেছি। তার মধ্যে একটি এসেছিল ভারতের দিকের পাহাড়ের আড়াল থেকে। সেটাকে তাড়া করছিল অন্য একটি যুদ্ধবিমান, সম্ভবত সেটি পাকিস্তানের বায়ু সেনার। দু’টোই আকাশে চক্কর কাটছিল। তার পর হঠাৎই একটিতে আগুন ধরে গেল। যেই সেটা নীচের দিকে আগুনের গোলার মতো নেমে আসছিল, তখনই তার ভিতর থেকে একজন বেরিয়ে গেল। তারপর প্যারাসুট নিয়ে পাখির মতো নেমে এল মাটিতে।’’
কামরান বলে চলেন, ‘‘আমি দেখলাম প্যারাসুটে ভারতীয় পতাকা ছিল। কিন্তু ওই পাইলট যেখানে নেমেছিলেন, বুঝতে পারছিলেন এই জায়গাটা কোথায়। ততক্ষণে আমাদের এলাকার লোকজন তাঁকে প্রায় ঘিরে ধরেছে। তখনই সে জানতে চায়, ‘এটা ভারত না কি পাকিস্তান’। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নিজের উপস্থিত বুদ্ধি প্রয়োগ করে বাঁচার চেষ্টা চালান। কামরান জানান, ‘‘এটা জানার পরও অভিনন্দনের সন্দেহ কাটেনি। তাই তিনি কৌশলে জল এবং মোবাইল চান। কিন্তু সেটা না দেওয়ায় তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নাম কি’? উত্তরে স্থানীয়রা বলেন ‘মোদী’। তখন অভিনন্দনের মুখে শোনা যায়, ‘‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান। কিন্তু তার প্রত্যুত্তরে জনতা কিছু না বলাতেই অভিনন্দন বুঝে যান, জায়গাটা পাকিস্তান।’’ তারপরেই তাঁকে পাকিস্তানের সেনারা ধরে ফেলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আর কয়েক সেকেন্ড পরে নামলেই ভারতের মাটিতে নামতে পারতেন অভিনন্দন।