প্রতিবছর বর্ষার সময় শহরের নানা জায়গায় জল জমে। নিত্যযাত্রীদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় কারণ, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমে থাকে। শহরের খালগুলোর জল নিষ্কাশিত হতে না পারার জন্য এই অসুবিধার সৃষ্টি হয়। সেই কারণে এবার প্রাক বর্ষা বৈঠকে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই খালগুলির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিলেন। মঙ্গলবার পুরভবনে শহরের এই খালগুলি নিষ্কাশিত করার জন্য উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে হয়েছে। মেয়রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ থেকে কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা এবং সেচ দফতর যৌথ ভাবে শহরের খালগুলির পরিদর্শন করবেন। সেই পরিদর্শনের রিপোর্ট পেশ করা হবে মেয়রের কাছে। মেয়র জানান, “বুধবারই এই পরিদর্শন শুরু হবে। খালগুলির সংস্কারের কাজ যদি আগেভাগে করা হয়, তাহলে শহরে কোথাও জল জমবে না। দ্রুত জমা জল খাল দিয়ে বেরিয়ে যাবে”।
গতকালের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা, পুরসভার নিকাশি বিভাগ, জঞ্জাল ব্যবস্থাপনা বিভাগের আধিকারিকারিকরা। বৈঠকে মেয়র নিকাশি বিভাগের আধিকারিকদের শহরের নিকাশিনালার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি টালিগঞ্জ, আলিপুর, চেতলা, বেহালার মানুষদের বর্ষাকালে জল জমার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় কারণ, টালিনালার লাগোয়া অংশে যে বাজারগুলি রয়েছে, সেগুলি থেকে যাবতীয় উচ্ছিষ্ট এবং প্লাস্টিক আবর্জনা সেখানে ফেলা হয়। তাতে টালিনালার গতিপথ অবরুদ্ধ হয়। গতকালের বৈঠকে স্থির হয়েছে, প্রতিটি বাজারের কাছে কম্প্যাক্টর স্টেশন তৈরি করা হবে। আবর্জনা ফেলার জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হবে। টালিনালায় আবর্জনা আটকাতে বেশ কয়েকটি জায়গায় নাইলনের জাল দেওয়া হয়েছে।
শহর এবং শহরতলির জল নিষ্কাশন নির্ভর করে বাগজোলা, চড়িয়াল, মণিখাল, বেগোর, সিপিটি, সাউথ কাটের মতো গুরুত্বপূর্ণ খালের উপরে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা জানান, মাঝেরহাটে যে ব্রিজ তৈরি করছে তার জেরে খালের জল বেরতে না পেরে আটকে যাচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে পূর্তসচিবের সঙ্গে কথা বলবেন বলে মেয়র জানিয়েছেন। মেয়র বলেন, “খালগুলিতে কোথায় কোথায় বাধা তৈরি হচ্ছে, কোন অংশ দিয়ে জল বেরতে সমস্যা হচ্ছে, তা যেন খুঁজে বের করে সমস্যার সমাধান দ্রুত করা হয়। বর্ষার আগে এই কাজ শেষ করতে হবে”।