গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার জঙ্গী হামলা এবং ভারতীয় বায়ুসেনার প্রত্যাঘাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেছিল কংগ্রেস। এরপর তার পাল্টা দিতে গিয়ে রাফাল প্রসঙ্গে মোদী দোষ চাপিয়েছিল কংগ্রেসের ঘাড়ে। এবার পাল্টা মোদীকেই বিঁধলেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। বললেন, ফ্রান্সে গিয়ে রাফাল চুক্তি সই করে জাতীয় সুরক্ষার সঙ্গে আপোস করেছেন মোদী। অ্যান্টনির প্রশ্ন, রাফাল চুক্তিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির রিপোর্ট উপেক্ষা করা হল কেন?
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ রাজনৈতিক সভায় বায়ুসেনার বালাকোট অভিযানে ক্ষয়ক্ষতি ও জঙ্গী মৃত্যুর সংখ্যার কথা ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে মোদী-শাহকে কাঠগড়ায় তুলে অ্যান্টনি প্রশ্ন তোলেন, ‘বায়ুসেনা কোনও তথ্য দিতে পারেনি, সরকার কোনও ঘোষণা করেনি, তা হলে বিজেপি সভাপতি পরিসংখ্যান তুলে ধরছেন কীসের ভিত্তিতে? এ ব্যাপারেও জবাব দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।’ মোদী-শাহ জুটিকে তাঁর পরামর্শ, জাতীয় সুরক্ষা ও সেনা অভিযান নিয়ে বিজেপির নোংরা রাজনীতি এবার বন্ধ করা উচিত।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পাকিস্তানের বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযানের ফল অন্য রকম হতে পারত, যদি বায়ুসেনার হাতে রাফাল বিমান থাকত। যা এখনও ভারতে আসেনি। এর জন্য দায়ী কংগ্রেস। কারণ, ঘুষ খাওয়ার উদ্দেশ্যে রাফাল চুক্তি পিছিয়ে দিয়েছে তারা। এর জবাবেই পাল্টা মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অ্যান্টনি। শাহর বক্তব্যের উল্লেখ করে প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘ইউপিএ জামানায় সেনা অভিযানের ব্যাপারে বিবৃতি দিতেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র। এখন বিজেপি সভাপতি রাজনৈতিক সভায় গিয়ে তথ্য দিচ্ছেন। কতজন মারা গেছেন, সেই সংখ্যা জানাচ্ছেন। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
মঙ্গলবার কংগ্রেস সদর দফতরে সাংবাদিকদের অ্যান্টনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনার ওপর পূর্ণ আস্থা আছে কংগ্রেসের। বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে স্যালুট।’ তিনি আরও বলেন যে, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী গোটা দেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ভূরি-ভূরি ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যে, ইউপিএ আমলে কমিশন খাওয়ার জন্য রাফাল চুক্তিতে দেরি করা হয়েছে। কিন্তু ওঁর এই অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই।’
অ্যান্টনির দাবি, ‘ক্যাগ রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, পূর্বের এনডিএ সরকার চার বছর নষ্ট করেছে। কিন্তু যখন ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় এল, তখন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা ও সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আপত্তি তুলেছিলেন। তার পর একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির রিপোর্ট উপেক্ষা করেছেন নরেন্দ্র মোদী।’ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, উচ্চ পর্যায়ের ওই কমিটির রিপোর্ট নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বা সুরক্ষা-বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি, কোথাও আলোচনা করা হয়নি। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর জবাব দেওয়া উচিত। ভোটের মুখে রাজনৈতিক স্বার্থে বিরোধীদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর আগে মানুষের কাছে সত্যিটা বলুন মোদী।