উরি হামলার স্মৃতি যখন ধীরে ধীরে আবছা হচ্ছে ঠিক তখনই আবারও এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল জম্মু-কাশ্মীর। গত মাসের ১৪ তারিখে কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে আত্মঘাতী জঙ্গিহানায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৪ জন সিআরপিএফ জওয়ান। ঘটনার দায় স্বীকার করে জইশ-ই-মহম্মদ। ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশবাসী। প্রতিশোধের তীব্র দাবি ওঠে দেশ জুড়ে। যদিও এর মধ্যেই বহু মহল থেকে অভিযোগ উঠেছিল সেনা কনভয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকার, কিন্তু বিক্ষোভের আঁচে সে সব নিয়ে তদন্ত এগোয়নি আর। তাই অধিকার এবং নিরাপত্তার দাবীতে বিক্ষোভ দেখালেন প্রাক্তন সেনারা।
১৪ তারিখের পর থেকে পাকিস্তানের আক্রমণ অব্যাহত। এই অবস্থাতেই রবিবার নয়াদিল্লির যন্তরমন্তরে বিক্ষোভ দেখান প্রাক্তন সিআরপিএফ জওয়ানেরা। দাবি করেন, এই জওয়ানদের পরিবারের প্রতিটি অশ্রুবিন্দুর বদলা নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বদলার প্রতিশ্রুতির বাইরে, সারা বছরের বাস্তব জীবনে এই আধা-সেনারা আসলে কতটা সুযোগ-সুবিধা পান? তাঁদের প্রাপ্য অধিকার দেওয়ার ব্যাপারে কতটা উদ্যোগী হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার?
রবিবার নয়াদিল্লির যন্তরমন্তরে ১,৪০০ প্রাক্তন সিআরপিএফ জওয়ান ধর্নায় বসেন। কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কারও হাতে বৃষ্টি থেকে বাঁচার ছাতা৷ কিন্তু প্রত্যেকের গলায় একই প্রতিবাদের সুর। তাঁদের অভিযোগ, “সরকার কেবল সেনাবাহিনীকে নানা ভাবে তোল্লাই দিয়ে এসেছে৷ অথচ বারবার আমাদেরই বেঘোরে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়৷ তা সে সুকমাই হোক আর পুলওয়ামা, মরতে হবে সেই সেনাকেই”। তাঁরা জানান, সেনা চিরকালই ভিআইপি পরিষেবা পেয়ে এসেছে এই দেশে। তাদের রেশন আলাদা, তাদের বেতন আলাদা, অবসরের পর পেনশনের স্কেলও আলাদা৷
কনফেডারেশন অফ এক্স প্যারামিলিটারি ফোর্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-মহাসচিব রণবীর সিংয়ের অভিযোগ, শুধু প্রতিশ্রুতিতে পেট ভরে না৷ তাঁর দাবি, আধা-সেনারা পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পান না৷ কঠিন পরিস্থিতিতে মোতায়েন আধা-সেনার জন্য থাকে না কোনও বিশেষ ভাতাও৷ এই আধাসেনাদের প্রায় সকলেরই মূল অভিযোগ, অর্থনৈতিক বৈষম্যের৷ তাঁদের দাবি, সেনাবাহিনীর জন্য এক পদ এক পেনশন শুরু হলেও বঞ্চিত থেকে গিয়েছেন আধা-সেনারা৷ যে হারে সেনাবাহিনীতে বেতন বৃদ্ধি হয়েছে, সেই তুলনায় আধা-সেনার বেতন মোটেই বাড়েনি। বাড়েনি পেনশনও।