২৭ তারিখ পাক যুদ্ধবিমান এফ ১৬-কে ধাওয়া করতে মিগ ২১ নিয়ে পাকিস্তানে হানা দিয়েছিলেন অভিনন্দন। সেখানেই গুলি করে নামানো হয় তাঁর বিমান। নিজেকে ‘ইজেক্ট’ করে প্যারাস্যুট নিয়ে সে দেশের মাটিতে নামেন তিনি। ধরা পড়েন পাক সেনার হাতে। অসম্ভব স্নায়ুর চাপ সহ্য করে আটক থাকেন ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময়। তারপরে কূটনৈতিক জয় হয়েছে ভারতেরই। ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফেরার পরে কার্যত উৎসব শুরু হয়েছিল। সেই আনন্দের প্রাথমিক পর্ব পেরিয়ে ঘোষণা হয়েছে, দেশের বীর সেনা, বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান এখনই কিছু মাস যুদ্ধবিমান চালাতে পারবেন না।
শনিবার থেকেই তাঁর শারীরিক এবং মানসিক নানারকমের পরীক্ষা হয়েছে। ডাক্তাররা তাঁর শরীরে লুকিয়ে–রাখা কোনও ‘বাগ’ খুঁজে পাননি। তবে পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্তি–পাওয়া বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান আঘাত পেয়েছেন তাঁর পাঁজরে। নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারের মাটিতে নামার পর স্থানীয় লোকজন চড়াও হয় তাঁর ওপর। তাদের মারধরেই এই আঘাত বলে অনুমান চিকিৎসকদের। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করার পর অভিনন্দনের পাঁজরে আঘাতের কথা জানতে পারেন। এ ছাড়া এমআরআই স্ক্যান করে মেরুদণ্ডের নীচে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন ডাক্তারেরা। সম্ভবত মিগ–২১ থেকে ঝঁাপিয়ে নীচে পড়ার কারণেই এই আঘাত। সরকারি এক সূত্র জানিয়েছে, দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের রিসার্চ ও রেফারাল হাসপাতালে অভিনন্দনের আরও পরীক্ষা করা হবে। এর আগে তাঁকে পরীক্ষা করা হয় এয়ারফোর্স সেন্ট্রাল মেডিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্টে।
সেনা সূত্রের খবর, আগামী ১০ দিন অভিনন্দনের নানারকম পরীক্ষা ও চিতিৎসা চলবে। অভিনন্দনের উপর পাকিস্তানি সেনা শারীরিক অত্যাচার না চালালেও, মানসিক চাপ তৈরি করেছিল। তাঁকে জেরাও করা হয়েছিল।আজ কয়েক দফায় গোয়েন্দা, সেনা ও বায়ুসেনার কর্তারা অভিনন্দনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই ‘ডিব্রিফিং’ প্রক্রিয়ায় তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানে কী ধরণের আচরণ করা হয়েছে, তিনি কী বলেছেন, তা জানার চেষ্টা হয়েছে। একইসঙ্গে এ বিষয়ে তিনি পরিবার ও সহকর্মীদের সামনে কতখানি মুখ খুলবেন, তাঁকে ভবিষ্যতে কী ভাবে চলতে হবে, তা বোঝানোর কাজ শুরু হয়েছে। বায়ুসেনার কর্তারা বলছেন, সুস্থ হয়ে ওঠার পাশাপাশি অভিনন্দনের মানসিক ভাবে ধাতস্থ হওয়াও প্রয়োজন।