গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গী দলের আত্মঘাতী হামলার পরে গোটা দেশের কাছেই এখন মূল চর্চার বিষয় ভারতীয় বায়ুসেনা এবং দেশের বীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তবে এবার বায়ুসেনাকে সামনে রেখেই বাকযুদ্ধ চলল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর।
শনিবার রাঁচীর সভায় মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে রাহুল বলেন, ‘যারা আমাদের দেশকে রক্ষা করছে, সেই বায়ুসেনার ৩০ হাজার কোটি টাকা লুট করে অনিল অম্বানীর পকেট ভর্তি করেছেন মোদী।’ রাহুলের এমন মন্তব্যের পরই রাতে রাতে তড়িঘড়ি পাল্টা দিতে চাইলেন মোদী। একটি টুইট করে তিনি দাবি করলেন, রাফালের অভাবই নাকি আজ অনুভব করছে দেশ। এরপর ব্যাখ্যা না-করেই পাকিস্তানের এফ-১৬-এর মোকাবিলায় ভারতের পুরনো মিগ-২১ ব্যবহারের দায় বিরোধীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
এরপরই মোদীর ওই মন্তব্যকে তুলে ধরে রাহুল টুইটারে লেখেন, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কি মোটেই লজ্জা নেই? আপনি ৩০ হাজার কোটি টাকা চুরি করে বন্ধু অনিলকে দিয়েছেন। রাফাল আসতে দেরির জন্য একা আপনি দায়ী। আপনার জন্যই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মেয়াদ-ফুরনো জেটে উড়তে হয় অভিনন্দনের মতো বীর পাইলটদের।’ গতকাল রাঁচীর মোরাবাদী ময়দানের সভা থেকেও কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন, এক জন চৌকিদার অন্য সব চৌকিদারের বদনাম করছেন।
রাহুলের কথায়, ‘‘চৌকিদারেরা আমায় বলেন, ‘আমরা তো সৎ।’ ঠিক। আমি তাঁদের বলেছি, এই চৌকিদার হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আপনারা এ নিয়ে চিন্তা করবেন না।’’ এরপর নিজের স্লোগানের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছেন— অনিল আম্বানিকে ‘অফসেট কন্ট্রাক্ট’ দিলে তবেই রাফাল চুক্তি হবে বলে তাঁকে জানিয়েছিলেন মোদী।’’
দলীয় সভায় পদবি নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে এক প্রস্ত খোঁচা দেন রাহুল। মঞ্চ থেকেই সকলের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বলুন তো, লুট করে দেশ থেকে পালানো সকলের পদবি ‘মোদী’ কেন? নীরব মোদী, ললিত মোদী অথবা…’’ বাক্য শেষ না-করেই রাহুল বলে ওঠেন, ‘‘চৌকিদার…?’’ জনতা উত্তর দেয়, ‘‘চোর হ্যায়!’’ গতকালের সভায় ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা, ঝাড়খন্ড বিকাশ মোর্চা ও আরজেডি নেতারাও ছিলেন। সেখানেই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনজাতিদের উদ্দেশ্যে রাহুল বলেন, ‘জল, জঙ্গল, জমিন আপনাদের। এর উপরে অম্বানী বা আদানিদের কোনও অধিকার নেই।’