পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গী হামলা হয়ে গেছে। তখনও পাকিস্তানের হাতে বন্দী ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমান। গোটা দেশজুড়েই যুদ্ধের আবহ। ঠিক এমন পরিস্থিতিতেও ‘দেশের বৃহত্তম ভিডিও কনফারেন্স’(বিজেপির দাবি) করে দলের হয়ে ভোটপ্রচারে ব্যস্ত ছিলেন মোদী। তাই দেখে কংগ্রেস নেতা তথা দলীয় মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, দলকেই দেশ মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যে ভুল কিছু বলেননি আবারও মিলল তার প্রমাণ। এবার দলের তরফ থেকে হওয়া প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে দেশের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলে দাবি করে বসলেন মোদী! যেখানে দেশের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
গতকাল, শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর দফতর(পিএমও) থেকে একটি টুইট করা হয়। টুইটে বলা হয়, ‘আমি খুবই গর্বিত যে দেশের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। এটা প্রত্যেক ভারতীয়রই গর্ব যে দেশের বীর উইং কমান্ডার অভিনন্দনও একজন তামিলনাড়ুবাসী।’ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, দেশের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। কিন্তু কথা হল, ১৯৭৫ সালে দেশের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব নেন কংগ্রেস নেত্রী ইন্দিরা গান্ধী। এরপর ফের ১৯৮০ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পান। তাহলে কী করে মোদী দাবি করতে পারেন দেশের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলাই!
প্রসঙ্গত, দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিটি নেতারই তাঁর দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে অন্তত ওয়াকিবহাল থাকা উচিৎ। সেখানে মোদী স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী। একজন প্রধানমন্ত্রী যদি তাঁর দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের বিষয়ে ‘অজ্ঞ’ থাকেন, তবে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে। এক্ষেত্রেও উঠেছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল-সহ একাধিক বিরোধী দলই প্রধানমন্ত্রীর তরফে এই ভুল তথ্য দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেছে। নিজের এমন অজ্ঞতার কারণে সোশ্যাল মিডিয়াতেও নেটিজেনদের বিদ্রুপের শিকার হয়েছেন মোদী। যদিও এই প্রথম নয়। এর আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন ‘শিশুসুলভ ভুল’ করে হাসির পাত্র হয়েছেন মোদী।
উল্লেখ্য, দূর্গাপুজোর শেষে দশমীর পর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে দূর্গার বদলে মা কালীর ছবি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। তখনও বিরোধী এবং নেটিজেনদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। পরে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করা হলেও আদতে তাতে লাভ হয়নি বিশেষ। আর এবার এককাঠি ওপরে গিয়ে দেশের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নামই ভুলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। এবং নিজের দলের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে দেশের প্রথম বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!