রাজ্যের সব দিকেই কড়া নজর তাঁর। প্রতিটি খুটিনাটি বিষয়ও তাঁর নখদর্পণে। এমনকি বিরোধীরা পর্যন্ত তাঁর স্মরণশক্তির তারিফ করে থাকেন। কারণ কোনও বিশেষ দিনেই ভুল হয় না তাঁর। প্রথম শুভেচ্ছাবার্তাটা আসে তাঁর তরফ থেকেই। যেমন সোনিয়া গান্ধী হোক বা অরুণ জেটলি, ইদানীং প্রায় সকলকেই টুইট করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তেমনই বর্তমানের শুভেচ্ছা প্রাক্তনকে। এবার বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্মদিনে টুইট করে তাঁকে শুভেচ্ছা জানালেন মমতা। লিখলেন, ‘বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে তাঁর জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।’
১ মার্চ বুদ্ধবাবুর জন্মদিন। এ বছর তিনি পা দিলেন ৭৬-এ। রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও বিরোধীদের প্রতি সৌজন্যে এতটুকুও যে খামতি নেই দিদির, বারবারই তাঁর প্রমাণ মিলেছে। বছর দেড়েক আগেও একবার নবান্ন থেকে বেরিয়ে সোজা চলে গিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে। তখন বুদ্ধবাবু বেশ অসুস্থ। মমতা চেয়েছিলেন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে তিনি যেন যাবতীয় চিকিৎসা করেন। রাজ্য সরকারের তরফে সব রকম ব্যবস্থা করে দিতেও চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু রাজি হননি বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা। কিন্তু তাতেও অসন্তুষ্ট না হয়ে বুদ্ধবাবুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘আমি বৌদিকে (বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য) বলেছি, যখন দরকার লাগবে তখনই যেন জানান।’
এরপর গত পুজোতেও শারদীয়ার প্রীতি শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে উপহারও পাঠান মমতা। বুদ্ধবাবুর জন্য আদ্দির পাঞ্জাবি আর মীরাদেবীর জন্য ধনেখালি তাঁত। যা পেয়ে খুশিও হয়েছিলেন তাঁরা। তবে এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর খোঁজও রেখেছেন মমতা। মাঝে যখন বুদ্ধবাবু চোখের সমস্যা গুরুতর আকার নিয়েছিল, সেই সময়ও ফোনে তাঁর খবর নেন তিনি। মমতা বারবারই এই দাবি করে এসেছেন তিনি সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আজ আরও একবার তাঁর সৌজন্যের রাজনীতির প্রমাণ দিয়ে দিলেন বাংলার জননেত্রী। বিরোধী শিবিরের জন্য যা রীতিমতো শিক্ষণীয় ব্যাপার।