শব্দ দূষণ ঠেকাতে বহুদিন ধরেই তৎপর রাজ্য। একাধিক ব্যবস্থা নেওয়ায় সুফল মিললেও কিছুতেই ডিজের মতো শব্দ দানবকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই ডিজের দাপাদাপি বন্ধ করতে এবার কড়া নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি প্রশাসনের একেবারে শীর্ষ মহল নবান্ন থেকে বার্তা আসতেই সক্রিয় হয়েছে রাজ্য পরিবেশ দফতর। বুধবারই পরিবেশ সচিব রাজ্যের সবক’টি জেলা এবং কমিশনারেট এলাকার শীর্ষ আধিকারিকদের এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছেন।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গেছে, ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, খোলা জায়গায় কোনও ভাবেই ডিজে অর্থাৎ ডিস্ক জকি ব্যবহার করা যাবে না। সেটা করলেই পুলিশ-প্রশাসন পরিবেশ সুরক্ষা আইনে মামলা রুজু করতে পারবে। এছাড়া কোনও সভা বা অনুষ্ঠানে লাউডস্পিকার বা মাইক্রোফোনও যাতে নিয়ম মেনে ব্যবহার করা হয়, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে জেলাশাসক, এসপি এবং কমিশনারেটের প্রধানদের। লাউডস্পিকার বা মাইক্রোফোন ব্যবহার করতে গেলে তাতে সাউন্ড লিমিটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। অবিলম্বে এই নির্দেশ কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ দফতর।
ডিজে-র উপদ্রব এবং তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রতিবাদীকে নিগ্রহ বা হেনস্থার ঘটনা রাজ্যে নতুন নয়। বিশেষ করে পুজোর মরশুম থেকে শুরু করে বড়দিন বা ইংরেজি বর্ষবরণ উদযাপনে ডিজের দাপট দেখা গিয়েছে রাজ্যজুড়ে। যদিও বিগত কয়েক বছরের তুলনায় তা অনেকটা কম হয়েছে। উল্লেখ্য, পরীক্ষার মরশুমেও বিজেপি মাইক্রোফোন ব্যবহারের আবেদন করলে তা নাকচ করে দেয় রাজ্য সরকার। বিজেপি আদালতে মামলা করলে আদলত গেরুয়া শিবিরকে ভর্ৎসনা করে রাজ্যের নির্দেশই বহাল রাখে।
ডিজে ও মাইক্রোফোন-লাউডস্পিকারের উপদ্রব বন্ধ করতে অতীতেও সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তবে এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রীই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন। তাঁর দফতর থেকেই পরিবেশ দফতরের আধিকারিকদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়। পর্ষদের এক আধিকারিক জানান, এই নির্দেশ অমান্য করলে মাইক বা ডিজে বক্স সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষা আইন অনুযায়ী সর্বাধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও হতে পারে।