সিমলা চুক্তি মেনে ১৯৭৬ সালের ২২ জুলাই ভারত এবং পাকিস্তান- দু’দেশের মধ্যে চালু হয়েছিল সমঝোতা এক্সপ্রেস। হিন্দি শব্দ ‘সমঝোতা’ বা ‘বোঝাপড়া’, এই নামেই ট্রেনের নাম রাখা হয়েছিল। এই ট্রেনে রয়েছে এসি–থ্রি টাযার কোচ সহ ছ’টি স্লিপার কোচ। ১৯৭১ সালে দুই দেশে যুদ্ধের পর একে–অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া করতেই এই ট্রেনটিকে চালু করানো হয়। কিন্তু সমঝোতা রইল কই? পুলওয়ামা হামলার পরে দুই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বন্ধ হয়ে গেল সমঝোতা এক্সপ্রেসের পরিষেবা।
পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তান–ভারতের মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমশই চড়ছে। বিশেষকরে বুধবার ভারতীয় বায়ুসেনার এক পাইলটকে বন্দী করার পর ভারত রীতিমতো ক্রুদ্ধ ইসলামাবাদের ওপর। পাকিস্তান সরকারকে একঘরে করতে কোনও কৌশলকেই হাতছাড়া করতে রাজি নয় ভারত। দুই দেশের মধ্যে চলা তীব্র উত্তেজনার পরিবেশের মধ্যে এ বার সমঝোতা এক্সপ্রেসের পরিষেবা বন্ধ করে দিল পাকিস্তান। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত এই ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে।
পাক রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে পাকিস্তানি চ্যানেল ডন নিউজ টিভি জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সমঝোতা এক্সপ্রেসের পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বুধবার ভারতের তরফে জানানো হয়েছিল, উত্তেজনা থাকলেও এই ট্রেন ভারত থেকে নির্ধারিত সময়েই ছাড়বে। নর্দার্ন রেলওয়ে জানিয়েছে, ‘বুধবার রাত ১১.২০–তে দিল্লি থেকে আটারিগামী সমঝোতা এক্সপ্রেসে চড়ে ভারত ছেড়েছেন ২৭ জন যাত্রী। এঁদের মধ্যে তিনজন পাকিস্তানি ও ২৪ জন ভারতীয় নাগরিক।’ অন্যদিকে লাহোর থেকে ১৬ জন যাত্রী নিয়ে তা দিল্লির দিকে শেষবারের মতো রওনা হয় সমঝোতা এক্সপ্রেস।
লাহোর থেকে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই ট্রেন ছাড়ত বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তান রেলমন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান ও ভারততের মধ্যে চলা সমঝোতা এক্সপ্রেস পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। লাহোর থেকে আটারি পর্যন্ত এই দূরপাল্লার ট্রেন বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ পাকিস্তান থেকে ছাড়ার কথা ছিল। তবে পাক রেলওয়ের অ্যাডিশনাল জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছেন, ‘নিরাপত্তা বিষয়ক তীব্র চাপান–উতোরের মধ্যে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ট্রেনের পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”।