পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার ঠিক বারো দিনের মাথায়, মঙ্গলবার পাল্টা দিয়েছিল ভারত। তবে গতকাল ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান মিরাজ ২০০০-এর আক্রমণের ২৪ ঘণ্টা পরেই, আজ ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা করায় পাক যুদ্ধবিমান এফ-১৬। উড়িয়ে দিল ভারতীয় বায়ুসেনা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রের খবর, বুধবার ভোরবেলা দক্ষিণ কাশ্মীরের নওশেরা সেক্টর দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে এই এফ-১৬। কিন্তু ভারতীয় বায়ুসেনার র্যাডারে তা ধরা পড়ে যায়। ফলে ভারতীয় আকাশসীমায় ঢোকার আগেই তাকে বাধা দেয় বায়ুসেনা। পালানোর চেষ্টা করে পাক যুদ্ধবিমান। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজৌরি ও পুঞ্চ সেক্টরে বোমাবর্ষণ করে এফ-১৬। ফলে পালানোর আগেই এই যুদ্ধবিমানকে গুলি করে মাটিতে আছড়ে ফেলে ভারতীয় বায়ুসেনা।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-ও জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ৩ কিলোমিটার ভিতরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের লাম উপত্যকায় পড়তে দেখা গেছে এফ-১৬ বিমানটিকে। বিমানটি ভেঙে পড়ার সময় একটি প্যারাশ্যুটকেও নামতে দেখা গেছে। তবে এফ-১৬ বিমানের চালক কী অবস্থায় রয়েছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। রাজৌরির সেক্টরে ভারতীয় সেনার ছাউনির কাছে পাক যুদ্ধবিমানগুলি বোমাবর্ষণ করলেও কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই ও এএনআই সূত্রে আরও জানা গেছে, এদিন সকালে নিয়ন্ত্রণেরখা পেরিয়ে ভারতের আকাশসীমায় ঢোকার চেষ্টা করে মোট ৩টি এফ-১৬। কাশ্মীরের পুঞ্চ ও নওশেরা সেক্টরে ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা করলেই ওই ৩টি এফ-১৬ বিমানের মধ্যে একটিকে গুলি করে নামায় ভারতের সুখোই-৩০। সরকারিভাবে অবশ্য এখনও এই ঘটনা জানানো হয়নি। তবে এই ঘটনার পরেই জম্মু, লেহ ও শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে সমস্ত উড়ান স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অমৃতসর বিমানবন্দরও। সেখানেও উড়বে না কোনও বাণিজ্যিক বিমানও। আবার পাঠানকোট বিমানবন্দরেও জারি করা হয়েছে সতর্কতা।
এই ঘটনার পরেই পাক সরকারের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে পাক যুদ্ধবিমানের ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনের চেষ্টাকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বুধবার পাক বায়ুসেনা নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আঘাত হেনেছে। এটা ভারতের আক্রমণের প্রত্যাঘাত নয়। পাক যুদ্ধবিমানকে বলা হয়েছিল, ভারতীয় সেনা ও মানুষকে নিশানা না করে অন্য জায়গায় আঘাত হানতে। এই যুদ্ধবিমান পাঠানোর প্রধান কারণ ছিল ভারতকে দেখানো, যে পাকিস্তান সব ধরণের আক্রমণের মোকাবিলা করার জন্য তৈরি।’
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসলামাবাদ কোনও রকমের যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় না। কিন্তু যদি বাধ্য করা হয়, তাহলে আমরা তৈরি। এটা দেখানোর জন্যই দিনের আলোয় নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করেছে পাক যুদ্ধবিমান। ভারত যেভাবে রাতের অন্ধকারে কোনও রকম প্রমাণ ছাড়া পাকিস্তানে আক্রমণ চালিয়েছে, আমরা সেই রাস্তায় হাঁটতে চাই না। আমরা শান্তি চাই। সেই সুযোগই আমরা ভারতকে দিচ্ছি।’