শাসন ক্ষমতার হাল ধরার পর থেকেই বাংলার মানুষের উন্নয়নে সদাসচেষ্ট থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সারাবছর ধরেই বিভিন্ন প্রকল্প জনসাধারণকে উপহার দেন তিনি৷ মমতার অন্যতম সেরা প্রকল্প কন্যাশ্রী আলোড়ন তুলেছিল চারপাশে৷ এই প্রকল্পের দ্বারা উপকৃত হয়েছিলেন বাংলার বহু ছাত্রীরা৷ এই প্রকল্প মমতাকে এনে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্মান৷ কন্যাশ্রীর পর এবার আরো নতুন প্রকল্প মমতার উন্নয়নের রথকে আরো গতিশীল করে তুলতে চলেছে৷ রাজ্য সরকারের খাদ্য দফতরের ‘খাদ্যসাথী’ প্রকল্পটি মনোনীত হয়েছিল স্কচ পুরস্কারের জন্য৷ শুধু মনোনীতই নয়, পশ্চিমবঙ্গে সকলের জন্য খাদ্য প্রকল্প ‘খাদ্যসাথী’ পেল ‘সেরার সেরা’ সম্মান।
অনলাইন ভোটের মাধ্যমে প্রথমে খাদ্যসাথী গোল্ড সম্মানের শংসাপত্র পায় আজ। তারপর গোটা দেশের মধ্যে যতগুলি প্রকল্প গোল্ড সম্মান পেয়েছে, তার মধ্যে থেকে ফের অনলাইন ভোটে খাদ্যসাথী সেরার সেরা হিসেবে প্ল্যাটিনাম শংসাপত্র পেয়েছে। সোমবার সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া এই সম্মান পশ্চিমবঙ্গের হয়ে গ্রহণ করেন রাজ্য খাদ্যদফতরের অতিরিক্ত সচিব অচ্যিন্তকুমার পতি এবং ডিস্ট্রিট ডিস্ট্রিবিউশন প্রকিওরমেন্ট অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের ডিরেক্টর অজয় ভট্টাচার্য।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘এই প্রকল্পে প্রায় ৯ কোটি মানুষ উপকার পাচ্ছেন। ৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এটা বড় সাফল্য।’ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন জমা পড়েছিল। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ২৬৯টি নাম জমা পড়েছিল। এর থেকে প্ল্যাটিনাম, সোনা, রুপো এবং ব্রোঞ্জ— এই ৪টি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়। এবার দেশের মধ্যে প্ল্যাটিনাম পেয়েছে মাত্র দুটি প্রকল্প। এর মধ্যে একটি এই রাজ্যের ‘খাদ্যসাথী’।
জানুয়ারি মাসে রাজ্য খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা কেন এই প্রকল্প বিশেষ, তা সবার কাছে উপস্থাপিত করেন। তাঁরা জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় ৮ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষ। খরচ হচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকা। তাঁরা ২ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছেন। কৃষক তাঁর ফসলের দাম পাচ্ছেন। প্রভাব পড়েছে বাজারে। বাজার চাঙ্গা হয়েছে। ভিটামিন–মিশ্রিত আটা আনা হয়েছে। যাকে মডেল করছে অন্যান্য অনেক রাজ্য। পাশাপাশি, রাজ্যের রেশন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন পণ্য। এর ফলে মানুষ বড় বড় বাজারের থেকে অনেক কম দামে পণ্য কিনতে পারছেন।
শুধু খাদ্যসাথী প্রকল্পই নয়, প্রত্যেকের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’ এবং স্কিল ডেভলপমেন্ট কর্মসূচি ‘উৎকর্ষ বাংলা’ জাতীয়স্তরে সম্মান পেল। ‘উৎকর্ষ বাংলা’ এবং ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পকে পুরস্কার দেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ৯ এপ্রিল জেনেভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের আইটিইউ–তে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।