গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আধা সামরিক বাহিনীর গাড়িতে জঙ্গী হামলা পর, ঠিক ১২ দিনের মাথায় এবার পাল্টা দিল ভারত। পাকিস্তার টের পাওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গী গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের একাধিক ঘাঁটি। সেনার হাতে নিহত হয়েছেন জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক ইউসুফ আজহার। কিন্তু হামলার আগেই ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গিয়েছেন মাসুদ আজহার। সূত্রের খবর, জইশ প্রধানকে রাওয়ালপিন্ডির সেনা হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোরে ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান নিয়ে হানা দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৮০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে বালাকোটে জইশের লঞ্চপ্যাড, ট্রেনিং ক্যাম্প ও কন্ট্রোল রুম লক্ষ্য করে প্রায় ১০০০ কেজি বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হয়। সূত্রের খবর, এই হামলায় অন্তত ৩৫০ জইশ জঙ্গী নিহত হয়েছে। নিহত হয়েছে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক ইউসুফ আজহার। নিহত হয়েছে ২৫ জইশ প্রশিক্ষকও।
সেনা সূত্রে খবর, এই হামলার আগেই জইশ প্রধানকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাওয়ালপিন্ডির সেনা হাসপাতালে। আপাতত সেখানেই রাখা হয়েছে তাঁকে। প্রসঙ্গত, পুলওয়ামায় হামলার পর থেকেই মাসুদ আজহারকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে নয়াদিল্লী। কিন্তু পাক সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, পাক প্রশাসনের কাছে মাসুদ আজহারের ব্যাপারে কোনও খবর নেই। এরপরেই ভারত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাক প্রশাসনকে বলে, ভাওয়ালপুরেই রয়েছেন মাসুদ। যার ফলে চাপে পড়ে পাক প্রশাসন জানায়, ভাওয়ালপুরে জইশ সদর দফতরের দখল নিয়েছে তারা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে পাকিস্তান জানায়, ওটা জঙ্গী ঘাঁটি নয়, মাদ্রাসা।
ভারতীয় বায়ুসেনা সূত্রে খবর, মাসুদ আজহারকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে পাক সেনা ও প্রশাসন। তাঁকে সেনা হাসপাতালে শেল্টার দেওয়া থেকেই এটা পরিষ্কার। পাক সরকার যতই বলুক, জইশ প্রধানের ব্যাপারে তাদের কাছে কোনও খবর নেই, সেটা পুরোটাই মিথ্যে। জইশকে ভেতর ভেতর সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু মাসুদ আজহারকে ছাড়া উচিত নয় বলেই মনে করছেন প্রাক্তন সেনা প্রধানরা। প্রয়োজনে অ্যাবোটাবাদে ঢুকে আলকায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে যেভাবে মার্কিন সেনা মেরেছিল, সেই রণকৌশল অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।