কেন্দ্র থেকে মোদি সরকারকে উৎখাত করতে বাংলায় ৪২টি আসনে জিততেই হবে। সোমবার নজরুল মঞ্চে কোর কমিটির বৈঠকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে সেই বার্তাই দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ভোট মেশিনে কারচুপি করতে বিজেপি কোম্পানি লাগিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, ‘ওই যে বলছে না বাইশটা পাব, চব্বিশটা পাব, এই জন্যই বলছে’।
আজ নজরুল মঞ্চে দলীয় কর্মীদের সাবধান করে দিয়ে মমতা বলেন, ‘ওরা (বিজেপি) ইভিএম এবং ভিভি প্যাট ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করবে।‘তাঁর অভিযোগ, ‘আমাদের কাছে খবর আছে ওরা শুধু বাংলার জন্যই একটি সংস্থাকে এ সব করার জন্য ঠিক করেছে।‘ এর পরেই দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘ওই যে বলছে না বাইশটা পাব, চব্বিশটা পাব, এই জন্যই বলছে। পাওয়াবো ভাল করে!’
নজরুল মঞ্চ থেকেই নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, “কাউন্টিং-এ তাঁদের পাঠান, যাঁরা শুধু ইভিএম নয়, ভিভি প্যাটের বিষয়টা বোঝেন।” বক্তৃতা দিতে দিতেই দিদি এ ব্যাপারে দলীয় নেতাদের ট্রেনিং-এর জন্য একটি কমিটি গড়ে দেন। তিন সদস্যের ওই কমিটিতে থাকবেন দীনেশ ত্রিবেদী, সৌগত রায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলা নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, বিকেল তিনটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত এঁরা তৃণমূল ভবনে থাকবেন। জেলা সভাপতিরা এসে যেন ট্রেনিং নিয়ে যান।
একইসঙ্গে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো উগ্র বিদ্বেষী শক্তিকে রুখে দেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ বলেন, ‘এদের কোথাও দেখলেই পুলিশে খবর দিন’। পাশাপাশি গভীর রাতে রাস্তায় গেরুয়াপন্থীদের মিছিল নিয়ে দলের স্থানীয় নেতাদের কৈফিয়ত তলব করেন তিনি। বলেন, ‘মাঝ রাতে যারা বাইক মিছিল বের করে তারা গুণ্ডা’।
মমতার অভিযোগ, এরাজ্যে টাকা দিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কেনার চেষ্টা চলছে। এব্যাপারে নাম না-করে বিজেপি নেতাদের কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। বলেন, ‘এত টাকা কোথা থেকে আসছে?’ মমতার দাবি, ‘ট্রেনে করে এরাজ্যে টাকা আনছে বিজেপি।‘ দলীয় কর্মীদের বিজেপিকে ভয় না পাওয়ার ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘তৃণমূল ৩৪ বছরের বাম সরকারকে উপড়ে ফেলেছে আর পাঁচ বছরের বিজেপি তো কোন ছাড়’।
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কটাক্ষ করে মমতা প্রশ্ন তোলেন, ‘পুলওয়ামা হামলার খবর আগে থেকেই ছিল মোদীর কাছে। তার পরেও কেন বাহিনীকে সড়কপথে পাঠানো হয়েছিল? কেন উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি কেন্দ্রীয় সরকার?’ শহীদ জওয়ানদের লাশ নিয়ে মোদী রাজনীতি করছেন বলে দাবি করেন তিনি।
বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোটকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘বাম-কংগ্রেস-বিজেপি সব একজোট হচ্ছে। চোর-ডাকাত সব একজোট হচ্ছে। আমাদেরও একজোট হতে হবে’। রাজ্যে আরএসএস-এর উত্থান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মমতা। বলেন, ‘নানা ভাবে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে আরএসএস ও বিজেপি। সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে ওরা। কাউকে বোরখা পরে কোনও মহল্লায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর রটানো হচ্ছে ছেলেধরার গুজব। এর ফলে বেশ কিছু জায়গায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে’। এমন কোনও ঘটনা নজরে এলে সংযত থেকে পুলিসকে খবর দিতে নির্দেশ দেন তিনি।
