প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেকে ‘দেশের চৌকিদার’ বললেও
কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ প্রায় প্রতিটা বিরোধী দলই তাঁকে আম্বানি-আদানির চৌকিদার বলেই কটাক্ষ করে এসেছে বরাবর। কিন্তু মোদী ঘনিষ্ঠ বলে বিরোধীরা যতই অভিযোগ তুলুক, ব্যবসা কিন্তু বাড়িয়েই চলেছে আদানি গোষ্ঠী। এবার বিমানবন্দর বেসরকারিকরণের প্রথম ধাপেই জয় পেল তারা। দেশের মোট পাঁচটি বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণের ভার পেল গৌতম আদানির সংস্থা।
প্রসঙ্গত, সোমবার টেন্ডার খোলার পর ‘হাইয়েস্ট বিডার’ হিসেবে পাঁচটি বিমাবন্দরেরই রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষেবার দায়িত্ব পাচ্ছে আদানি গোষ্ঠী। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এএআই) সূত্রে এমনই খবর মিলেছে। এ প্রসঙ্গে এএআই-এর এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, পদ্ধতিগত বিষয়গুলি দ্রুত শেষ করে শীঘ্রই বিমাবন্দরগুলির ভার ছেড়ে দেওয়া হবে আদানি গোষ্ঠীকে।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার অধীনে থাকা দেশের ছ’টি বিমানবন্দর সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে চালানো হবে।সেই মতো আমেদাবাদ, তিরুঅনন্তপুরম, লখনউ, ম্যাঙ্গালুরু, জয়পুর এবং গুয়াহাটি বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। গুয়াহাটির দরপত্র আগামিকাল মঙ্গলবার খোলা হবে। বাকি পাঁচটি বিমানবন্দরের জন্যই সবচেয়ে আকর্ষণীয় দর দেওয়ায় এই টেন্ডার জিতে নিয়েছে আদানি গ্রুপ।
কিসের ভিত্তিতে বাছাই? এএআই সূত্রে খবর, প্রতি মাসে এক জন প্যাসেঞ্জার পিছু কত খরচ করতে পারবে সংস্থা, সেই হিসেবেই দরপত্র আহ্বান করা হয়। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, অন্যদের তুলনায় আদানি গোষ্ঠীর দেওয়া দরপত্র ছিল সবচেয়ে বেশি এবং আকর্ষণীয়। সেই কারণেই পাঁচটি টেন্ডারই জিতে নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী।
ছ’টি বিমানবন্দরের জন্য সব মিলিয়ে ১০টি সংস্থার ৩২টি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে আমেদাবাদ ও জয়পুরে সাতটি করে, লখনউ ও গুয়াহাটির জন্য ছ’টি করে এবং ম্যাঙ্গালুরু ও তিরুঅনন্তপুরমের জন্য টেন্ডার জমা পড়ে তিনটি করে। তবে টেন্ডার জমা দেওয়া অন্য শিল্প সংস্থাগুলির সম্পর্কে বিশেষ জানা যায়নি। শিল্প মহল মনে করছে, এই পাঁচটি টেন্ডারের যা প্রবণতা, তাতে গুয়াহাটির দায়িত্বভারও আদানি গ্রুপের পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
প্রসঙ্গত, মুকেশ আম্বানির সংস্থা রিলায়েন্সের বিজ্ঞাপনে দেশের প্রায় সব বড় সংবাদপত্রে প্রথম পাতায় মোদীর পাতাজোড়া ছবি ছাপা হওয়ায় বিতর্ক হয়েছে। আবার রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তিতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনিল আম্বানির সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকা। যা নিয়ে অভিযোগে সরব কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও।
ঠিক তেমনই বরাবরই মোদী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আদানিরা। রিলায়েন্সের মতো আদানি গ্রুপকেও নানা সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একাধিক বার। আর এবারও যেভাবে পাঁচ বিমানবন্দরের টেন্ডার জিতে নিল আদানি গোষ্ঠী, তাতে স্বজনপোষণের তত্ত্বই আরও জোরদার হচ্ছে। সবমিলিয়ে, প্রশ্ন কিন্তু উঠছেই।