কথায় আছে, চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা। কিন্তু যদি কেউ ধরা পড়ে যায় তখন? তখন কপালে জোটে মার। তবে কখনও কখনও আবার চোরের ওপর বাটপাড়ি হতেও দেখা যায়। যেমন এটিএমের লক্ষ লক্ষ টাকা লুঠ করেও তা হাতে এল না নয়ডার এক ডাকাত দলের। কারণ তা নিয়ে চম্পট দিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরাই। আর উল্টে পুলিশের জালে ধরা পড়তে হল এক ডাকাতকেই।
উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় এমনই ঘটনা ঘটার পর পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ সেক্টর ৮২-তে এটিএম থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা লুঠ করলেও তা নিয়ে পালাতে পারেনি ডাকাতরা। কী ঘটেছিল? নয়ডার ফেজ ২ থানার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সে দিন দুপুরে ওই এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা ভরতে আসেন রিফিলিং এজেন্সির একটি গাড়ি। ব্যাঙ্কের সামনে এসে তা থামতেই সেখানে হাজির হয় দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় মোটরবাইক আরোহী। এরপর ওই গাড়িটিকে ঘিরে ফেলে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে তারা।
রিফিলিং এজেন্সির কর্মীদের দিকে পিস্তল ঠেকিয়ে গাড়ি থেকে টাকার ব্যাগগুলি ছিনতাই করে চম্পট দেয় তারা। অত্যন্ত দ্রুত গতিতে মোটরবাইক চালাচ্ছিল ওই দুষ্কৃতীরা। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেনি তারা। এটিএম থেকে কিছুটা দূরে একটি গাড়িকে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় মোটরবাইকটি। রাস্তায় ছিটকে পড়ে দু’জনই। এক জন গিয়ে পড়ে নর্দমার ভিতরে। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে টাকা বান্ডিল ভর্তি ব্যাগগুলিও।
তখনই দুর্ঘটনা দেখে এগিয়ে আসেন পথচারী ও স্থানীয়রা। তবে বাইকের সামনে আসতেই তাঁদের চোখে পড়ে রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে বান্ডিল বান্ডিল টাকার উপর। এরপর আর যায় কোথায়! জখমদের ছেড়ে টাকার বান্ডিল নিয়ে পালাতে শুরু করেন সকলে। বেগতিক দেখে নর্দমার থেকেই পিস্তল উঁচিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে এক দুষ্কৃতী। যদিও অন্যজন ততক্ষণে সেই এলাকা থেকে চম্পট দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখান থেকে নানহে নামের এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুলন্দশহরের বাসিন্দা নানহের কাছ থেকে পাওয়া ১৯ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার কাছ থেকে বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু বাকি টাকার কী হল? পুলিশ আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, বাকি টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দা ও পথচারীরা। ফলে সেই টাকা আর ফেরত পাওয়া যায়নি। এবং অদূর ভবিষ্যতেও পাওয়া সম্ভব নয়। তবে অন্য দুষ্কৃতীর খোঁজে এখনও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।