জনগণ মুখ ফিরিয়েছে। কর্মী সংখ্যা তলানিতে। সেসব বুঝেই বোধহয় সাংবাদিক বৈঠক করে নির্বাচনে হারার আগে হেরে যাওয়ার বার্তা দিয়ে দিলেন বিমান বসু। জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ আসনে সিপিএম প্রার্থী দিলে তৃতীয়, চতুর্থ এমনকী পঞ্চমও হতে পারে।
দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে উত্তর দিনাজপুরে গিয়েছিলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বিমান বসু। রায়গঞ্জের দলীয় কার্যালয়ে মহম্মদ সেলিমকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। সেখানেই সিপিএম কটা আসনে লড়বে জানতে চাওয়া হলে বিমানবাবু সাফ বলে দেন, ‘সিপিআইএম সব আসনে লড়বে কি না এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কোথাও থার্ড, ফোর্থ, ফিফথ হওয়ার জন্য সিপিআইএম লড়াই করবে না এটা সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ এখানেই না থেমে সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য বলেন, ‘২২টি আসনে আমরা থার্ড, ফোর্থ, ফিফথ হব না।’ অর্থাৎ বাকি আসনে লড়লে শেষের দিক থেকে প্রথম হবে সিপিএম।
রায়গঞ্জে বিমানবাবুর এই মন্তব্যের পরেই ঝড় বয়ে যায় আলিমুদ্দিনে। কমিউনিস্ট রেজিমেন্টেশন দিয়ে যা ছিল এক্কেবারে গোপন, এ বার সেটাই হাটে হাড়ি ভেঙে জানিয়ে দিলেন দলের শীর্ষ নেতা। তবে বিমানবাবুর এই মন্তব্য নিয়ে কোনও বাম নেতাই মুখ খুলতে চাননি।
তবে দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ চেপে রাখা যাচ্ছে না। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, ২০টি আসনে যদি চার, পাঁচ নম্বর হতে হয় তাহলে নেতারা কী ঘাস কাটছিলেন? সংগঠনের এমন বেহাল দশা হল কেন? সব দায় তৃণমূলের উপরে চাপালে হবে? নেতাদের কি কোনও দায় নেই?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই যদি বড়ভাইয়ের অবস্থা হয়, তাহলে বাম শরিকদের অবস্থা যে আরও শোচনীয় সেটা বলাই বাহুল্য। তাঁরা বলছেন, এত বড় ব্রিগেডের পর বিমানবাবুর এই মন্তব্য দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।