কোনও রকম ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন ছাড়াই জঙ্গলের জমি থেকে আদিবাসী-বনবাসীদের উৎখাত করতে চাইছে মোদী সরকার। এবার এমনই অভিযোগ তুললেন বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১৬টি রাজ্যের ১০ লক্ষের বেশি আদিবাসী-বনবাসী পরিবার উচ্ছেদের আশঙ্কায় ভুগছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের জমানায় অরণ্যের অধিকার আইনের মূল কথা ছিল, আইনত জঙ্গলের জমিতে বসবাসকারী আদিবাসী ও অন্যান্য বনবাসীদের পুরুষানুক্রমে বসবাস করা জমি ও জঙ্গলের সম্পদের অধিকার সুনিশ্চিত করা। কিন্তু বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চের নির্দেশ, ওই আইনে যে সব পরিবারের অধিকার বা পাট্টার দাবি খারিজ হয়ে গিয়েছে, জুলাইয়ের মধ্যে তাদের উৎখাত করতে হবে।
বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকারই গত পাঁচ বছরে অরণ্যের অধিকার আইনকে দুর্বল করেছে। তার ফলেই আদিবাসী-বনবাসীদের জঙ্গলের জমিতে অধিকাংশ পাট্টার আবেদন খারিজ হয়েছে। ২০১৮-র ডিসেম্বর পর্যন্ত জমা পড়া ৪২.১৯ লক্ষ আবেদনের মধ্যে মাত্র ১৮.৮৯ লক্ষ আবেদন গৃহীত হয়েছে। নাসিক থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় কিসান লং মার্চেরও অন্যতম ক্ষোভ এই পাট্টা না পাওয়া।
বাঘ-সিংহকে জঙ্গল থেকে উৎখাত করার পর ক্ষতিপূরণ দিতে হয় না, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করারও তেমন দায় নেই। কিন্তু আদিবাসী, বনবাসীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, পুনর্বাসনেরও বন্দোবস্ত করতে হয়। কিন্তু আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্র অবস্থান নেবে কি না, তার কোনও সদুত্তর নেই। মুখে কুলুপ আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রকের। তবে সরকারের অন্দরের খবর, আদিবাসী মন্ত্রী জুয়াল ওরামের কথা কেউ নাকি কানেই তুলছেন না! তিনি বিরোধীতা করায়, তাঁর বদলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রককে এই মামলা সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী আগেই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের আইনজীবীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আর এবার রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে ক্ষমতায় আসা কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লিখে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, যে সমস্ত পাট্টার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে, সে সব নতুন করে দেখা হোক। পাট্টার আবেদনকারীদের সরকারই সাহায্য করুক। মানুষের ভোটকে সম্মান জানাতেই এই অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে বলে মত রাহুলের।