১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ৪৪ জন ভারতীয় জওয়ানকে হত্যা করেছিল পাক মদতপুষ্ট জইশ জঙ্গিরা। তার পর থেকেই আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় পাকিস্তানকে বয়কটের রাস্তায় হেঁটেছে ভারত। কূটনীতির বেড়া ডিঙিয়ে সেই বয়কট ক্রীড়া, সংস্কৃতি সহ আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে পড়েছিল। এর পরই নয়াদিল্লির শুটিং বিশ্বকাপে দুই পাকিস্তানি শুটারকে ভিসা না দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার জেরেই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির তোপের মুখে পড়ল ভারত। ভারতের সঙ্গে আগামী দিনে সব ধরনের আলোচনা বন্ধ করার কথা জানাল তারা।
পাকিস্তানি শুটারদের ভিসা না-মঞ্জুর হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির ক্রমশ চক্ষুশূল হয়ে উঠছে ভারত। শনিবার থেকে নয়াদিল্লিতে শুরু হতে চলা শুটিং বিশ্বকাপে তো বটেই, এমনকি পরবর্তীতেও কোনওরকম আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের ব্যাপারে ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। আইওসি’র তরফ থেকে জানানো হয়েছে এমন ঘটনা অলিম্পিক চার্টারের বিরোধী। তাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত আশ্বাস না পাওয়া অবধি ভারতের উপর এই নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে।
পাকিস্তানি শুটারদের ভিসা না-মঞ্জুর হওয়ার কারণে নয়াদিল্লি শুটিং বিশ্বকাপ থেকে ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে যোগ্যতা অর্জনের জন্য ১৬টি কোটার প্রস্তাব তুলে নেয় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির লিসিন জানান, ‘আইওসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শুটিং বিশ্বকাপের জন্য ভারত পাক দলের ভিসা মঞ্জুর করতে না পারার কারণে ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে থাকছে না পূর্ব প্রস্তাবিত কোনও কোটা।’ সবরকম চেষ্টা সত্ত্বেও নয়াদিল্লি শুটিং বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার জন্য ভারতের থেকে ভিসা পেতে ব্যর্থ পাকিস্তানের তিন শুটার। যারমধ্যে দু’জন ২৫ মিটার র্যাপিড ফায়ার পিস্তল শুটার। ঘটনাক্রমে নয়াদিল্লি শুটিং বিশ্বকাপ থেকে আসন্ন টোকিও অলিম্পিকের ২৫ মিটার র্যাপিড ফায়ার পিস্তল ইভেন্টে সরাসরি যোগ্যতা অর্জনের জন্য ১৬টি কোটা নির্ধারিত হয়। কিন্তু বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে না পারার কারণে সরাসরি যোগ্যতা অর্জনের বিষয়ে বিরোধীতা করে পাকিস্তান।
অলিম্পিক কমিটি তাঁদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা পুরো বিষয়টি জানার পর শেষ চেষ্টা করেছিলাম। ভারত সরকারের সঙ্গেও কথা বলেছিলাম। কিন্তু পাকিস্তানি প্রতিযোগীদের ভারতে হতে চলা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়েই অলিম্পিক এগজিকিউটিভ বোর্ড ভারত সরকার এবং ভারতের জাতীয় অলিম্পিক সংস্থার সঙ্গে সব রকমের আলোচনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী দিনে ভারত অলিম্পিক কমিটি অনুমোদিত যে সমস্ত প্রতিযোগিতার আবেদন করেছিল বা করবে বলে ভেবেছে, বাতিল করা হল সেই সমস্ত কিছুই।’