সারা দেশ যখন সেনা মৃত্যুর শোকে স্তব্ধ, তখন শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমনই অভিযোগ কংগ্রেসের মুখপাত্র রনদীপ সুরজেওয়ালা। সরকারের তরফে ঘটনার কথা মেনে নিয়ে দেওয়া হল অভূতপূর্ব সাফাই। বলা হয়, যাবতীয় দোষ নেটওয়ার্কের। সেই জন্যই জঙ্গী হানার খবর প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে দেরিতে পৌঁচেছিল।
১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জাতীয় সড়কের ওপর বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে সিআরপিএফ-এর কনভয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়, শহিদ হন ৪৯ জন জওয়ান। প্রধানমন্ত্রীকে কেন দেরিতে সেই খবর দেওয়া হল, তা নিয়ে নিরাপত্তা সংস্থাগুলির কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
জানা গেছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি দেরাদুন গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য ৪ ঘণ্টা আটকে পড়ে তাঁর বিমান। সকাল ১১টা ১৫ নাগাদ জিম করবেট পার্কে পৌঁছে সেখানে একটি টাইগার সাফারি, একটি ইকো-ট্যুরিজম জোন এবং উদ্ধারকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি। এই সময়ের মধ্যেই পুলওয়ামায় ঘটে ভয়াবহ জঙ্গী হামলা। কিন্তু সেই খবর তখন মোদীকে দেওয়া হয়নি। সরকারি খবর অনুযায়ী, নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকায় মোদীর কাছে খবর পৌঁছয়নি।
এর পরে ধিকালার কালাগড় থেকে মোটরবোটে চড়েন প্রধানমন্ত্রী। এই সময়ে তাঁর কাছে আসে পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার খবর। রামনগর গেস্টহাউসে ফিরে আসার আগেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিতকুমার দোভাল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জম্মু কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের থেকে সেখানকার খবর নেন। সরকারি সূত্রের দাবি, এই সময়টা তিন জনের সঙ্গে লাগাতার ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি হামলা সম্পর্কে তাঁকে দেরিতে জানানোয় ক্রুদ্ধ হন তিনি। খারাপ আবহাওয়ার জন্য চপার ওড়ানো না গেলেও, খানাখন্দে ভরা রাস্তা দিয়েই রামনগর থেকে বরেলী যান প্রধানমন্ত্রী।গভীর রাতে দিল্লী পৌঁছন তিনি।
ঘটনার পরে বৃহস্পতিবার সকালে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা অভিযোগ করেন, ‘জঙ্গী হামলার ঘটনা দুপুর তিনটের পরেই ঘটে। তা সত্ত্বেও সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত ডিসকভারি চ্যানেলের সঙ্গে ‘প্রোমোশনাল ফিল্ম’ শ্যুট করছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর প্রশ্ন, ‘পুলওয়ামায় আমাদের জওয়ানদের শহীদ হওয়ার ঘটনায় পুরো দেশ যখন শোক পালন করছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত সিনেমার শ্যুটিং করতে ব্যস্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সারা বিশ্বে এই রকম প্রধানমন্ত্রী আর আছেন কি?’